ফেলানী খাতুন: এক অসমাপ্ত বিচারের কাহিনী
২০১১ সালের ৭ই জানুয়ারি, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কুড়িগ্রামের অনন্তপুর-দিনহাটা সীমান্তের খিতাবেরকুঠি এলাকায় এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যা আজও বাংলাদেশের মানুষের মনে গভীর আঘাত হিসেবে বর্তমান। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর গুলিতে নিহত হন ১৪ বছরের কিশোরী ফেলানী খাতুন। এই ঘটনায় কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলন্ত ফেলানীর লাশের ছবি বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ফেলানী তার বাবার সাথে নয়াদিল্লিতে গৃহকর্মীর কাজ করত এবং বিয়ের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে ফিরছিল।
ঘটনার বর্ণনা:
ফেলানী এবং তার বাবা নুরুল ইসলাম নূরু (যিনি দীর্ঘদিন নয়াদিল্লিতে কাজ করতেন) সীমান্ত পারাপারের সময় কাঁটাতারে আটকে পড়ে। ভয়ে ফেলানীর চিৎকারে বিএসএফের সদস্যরা গুলি চালায় এবং ফেলানী নিহত হয়। তার লাশ ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঝুলে থাকে কাঁটাতারে। এই মর্মান্তিক দৃশ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে এবং বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি দুই দেশের মানবাধিকার সংস্থাগুলো প্রতিবাদ জানায়।
বিচার প্রক্রিয়া:
ফেলানী হত্যার পর বিএসএফ নিজস্ব আদালতে ঘটনার জন্য দায়ী সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। বিজিবি বিএসএফের সাথে বৈঠক করে ফেলানী হত্যার বিচারের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। বিএসএফ ‘জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্ট’ গঠন করে এবং বাংলাদেশের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করে। তবে, আদালতের রায় বারবার পিছিয়ে যায় এবং এখনো পর্যন্ত চূড়ান্ত রায় প্রদান করা হয়নি। ভারতের এক মানবাধিকার সংস্থা সুপ্রীম কোর্টে পিটিশন করে ফেলানী হত্যার বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি করে।
সাম্প্রতিক অবস্থা:
ফেলানী হত্যার ১০ বছরের বেশি সময় পরেও ন্যায়বিচারের অপেক্ষা করছে তার পরিবার। আইনি প্রক্রিয়া এখনও অচল থাকায় পরিবারের হতাশা বেড়েছে। বিশ্বব্যাপী এই ঘটনা আন্তর্জাতিক আলোচনার জন্ম দিলেও বিচারের অভাবে এটি এক অসমাপ্ত কাহিনী হিসেবেই বর্তমান।
আমরা আপনাকে অবগত রাখবো:
এই ঘটনাটি নিয়ে নতুন তথ্য পাওয়া মাত্র আমরা আপনাকে অবগত রাখবো।