প্রচার

বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ: ধর্ম, সংস্কৃতি ও সমাজের সেবায়

১৯৪৯ সালের ৪ ডিসেম্বর, পটিয়ার লাখেরা অভয় বিহারে ‘পূর্ব পাকিস্তান বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ’ নামে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে বর্তমান নামে পরিচিতি লাভ করে এই সংগঠন। শ্রীমৎ ধর্মদর্শী মহাথেরো ও শ্রীমৎ বংগীশ ভিক্ষু যথাক্রমে প্রথম কার্যনির্বাহী পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বৌদ্ধদের অধিকার আদায়, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিতকরণ, বৌদ্ধ ঐতিহ্যের সংরক্ষণ ও প্রচার, জাতীয় ছুটি ঘোষণা, সহ বিভিন্ন দাবিতে সংঘ আন্দোলন করে। ১৯৫৪ সালে সুধাংশু বিমল বড়ুয়া সংঘের প্রতিনিধিত্বে নির্বাচিত হন।

১৯৬০ সালে ঢাকার কমলাপুরে ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহার প্রতিষ্ঠা করে সংঘ। এটি সংঘের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে কাজ করে এবং ধর্মরাজিক অনাথালয়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কারিগরি বিদ্যালয়, চিকিৎসালয়, বোধিঅঙ্গন সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। ১৯৬২ সালে থাইল্যান্ডের রাজা ও রাণীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ১৯৬৩ সালে চীন সফরে গিয়ে অতীশ দীপঙ্করের দেহাবশেষ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়, যা ১৯৭৮ সালে বাস্তবায়িত হয়।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বৌদ্ধ সভ্যতার পুনর্জাগরণ ও বিকাশে সংঘ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৮৩ সালে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অতীশ দীপঙ্করের সহস্রতম জন্মবার্ষিকী পালন ও ১৯৮৭ সালে ‘পাহাড়পুর বৌদ্ধ সভ্যতা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজন উল্লেখযোগ্য। ১৯৮৫ সাল থেকে নিয়মিত শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা এবং ১৯৫৬ সাল থেকে ‘কৃষ্টি’ নামে দ্বিভাষিক মুখপত্র প্রকাশ করে আসছে। ভারতের বুদ্ধগয়ায় বাংলাদেশের পক্ষে বৌদ্ধবিহার নির্মাণও সংঘের এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ
  • বৌদ্ধদের অধিকার আদায় ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
  • ঢাকার ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহার প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি
  • অতীশ দীপঙ্করের দেহাবশেষ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা
  • আন্তর্জাতিক স্তরে বৌদ্ধ সংস্কৃতির প্রচার ও সেমিনার আয়োজন