দত্তক

আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮:৩৯ পিএম

বাংলাদেশে দত্তক নেওয়ার বিষয়টি বেশ জটিল এবং অনেকের কাছেই অস্পষ্ট। একদিকে নিঃসন্তান দম্পতিদের সন্তানের প্রতি আকর্ষণ, অন্যদিকে অভিভাবকহীন শিশুদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা— এই দুইয়ের মধ্যে একটি সুষম সমাধান খুঁজে পাওয়া জরুরি। বর্তমানে বাংলাদেশে দত্তক নেওয়ার স্পষ্ট কোন আইন নেই। ১৯৮০ সালে সংশোধনীর মাধ্যমে বিদেশিদের দ্বারা শিশু দত্তক নেওয়া বন্ধ হলেও, বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য আইনি অভিভাবকত্ব গ্রহণের ব্যবস্থা রয়েছে, যা জটিল আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়।

এই প্রক্রিয়ায়, পরিত্যক্ত বা অভিভাবকহীন শিশুদের আইনি অভিভাবকত্ব গ্রহণের জন্য পারিবারিক আদালতে আবেদন করতে হয়। আবেদনকারী দম্পতির অন্তত একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হতে হবে। আবেদন পর্যালোচনার পর, আদালত যদি দম্পতিকে উপযুক্ত বলে মনে করে তাহলে তাদের আইনি অভিভাবকত্ব দেওয়া হয়। তবে, শিশুটিকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। এই পুরো প্রক্রিয়া দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর হতে পারে, দু’বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। সম্পত্তির অধিকারের দিক থেকেও পালক সন্তানদের কিছুটা অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতে হয়। মুসলিম আইনে দত্তক সন্তান সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয় না, হিন্দু আইনে কিছুটা ব্যতিক্রম থাকলেও।

১৯৭১ সালের পর, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে অসংখ্য অভিভাবকহীন শিশু ছিল। তাদের বিদেশে দত্তক দেয়ার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে, নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর, ১৯৮০ সালে এই ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। নেদারল্যান্ডসসহ অনেক দেশ বাংলাদেশসহ কিছু দেশ থেকে দত্তক নেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে অনিয়মের অভিযোগের কারণে। তবে বর্তমানে বাংলাদেশে শিশু দত্তকের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট এবং সহজ আইন প্রণয়নের দাবি উঠছে। এই আইন অনিয়ম রোধে এবং নিঃসন্তান দম্পতিদের জন্য একটি সুষ্ঠু এবং সহজ প্রক্রিয়া তৈরীতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি, ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য প্রাপ্ত হলে আর্টিকেলটি আপডেট করা হবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • বাংলাদেশে দত্তক নেওয়ার কোন সুনির্দিষ্ট আইন নেই
  • আইনি অভিভাবকত্ব গ্রহণের জটিল প্রক্রিয়া রয়েছে
  • পালক সন্তানদের সম্পত্তির অধিকার নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে
  • ১৯৭০ এর দশকে বিদেশি দত্তক নেওয়ার ব্যবস্থা ছিল, পরে বন্ধ হয়ে যায়
  • একটি সহজ ও সুষ্ঠু দত্তক আইনের দাবি উঠছে

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।