তুরাগ: ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ থানা ও নদী
ঢাকা মহানগরীর তুরাগ থানা ১২.১৭ বর্গ কিমি আয়তনের একটি প্রশাসনিক এলাকা। ২৩°৫২´ থেকে ২৩°৫৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২১´ থেকে ৯০°২৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত এ থানার উত্তরে গাজীপুর সদর উপজেলা, দক্ষিণে পল্লবী থানা, পূর্বে গাজীপুর সদর উপজেলা ও উত্তরা থানা এবং পশ্চিমে সাভার উপজেলা অবস্থিত। ২০০৫ সালের ২৭ জুন উত্তরা থানার হরিরামপুর ইউনিয়নের অংশবিশেষ নিয়ে তুরাগ থানা গঠিত হয়। এই থানার জনসংখ্যা প্রায় ৫৩৫৫৮, যার মধ্যে পুরুষ ২৮৬৪২ এবং মহিলা ২৪৯১৬। ধর্মীয়ভাবে ৫১৫৪৫ মুসলিম, ১৮৭৮ হিন্দু, ১২১ বৌদ্ধ এবং ১৪ জন অন্যান্য ধর্মের অনুসারী বাস করেন।
তুরাগ নদীর নামানুসারে এ থানার নামকরণ হয়েছে। তুরাগ নদী টাঙ্গাইল জেলার লৌহজং নদী থেকে উৎপত্তি লাভ করে বর্তমানে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীপ্রণালীর অংশ। শুষ্ক মৌসুমে ক্ষীণ হলেও এটি একটি সক্রিয় নদী। ১৯৫০ সালের আসাম ভূমিকম্পের পর থেকে যমুনা নদীর পলি অবক্ষেপ তুরাগের উপত্যকা জুড়ে বিস্তৃত। ঢাকার মিরপুরের কাছে এটি বুড়িগঙ্গা নদীর সাথে মিলিত হয়। নদীটি নৌকা চলাচলের উপযোগী এবং ময়মনসিংহ ট্রাঙ্ক রোডের দক্ষিণে অবস্থিত সমগ্র তুরাগ উপত্যকা বোরো ধান চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।
তুরাগ থানার অর্থনীতি কৃষি, ব্যবসা, চাকুরি, এবং বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উপর নির্ভরশীল। পোশাকশিল্প, হোসিয়ারি, সোয়েটার, চক পাউডার, রং ও ফেব্রিকস প্রস্তুতকারী কারখানা, চালকল, প্লাস্টিক শিল্প, বিদ্যুৎ, এবং নির্মাণ শিল্প উল্লেখযোগ্য। শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়, ৩ টি কলেজ, ৬ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। স্বাস্থ্য সেবায় ৪ টি হাসপাতাল এবং ১ টি দাতব্য চিকিৎসালয় কাজ করে। তুরাগের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও জনজীবন বৈচিত্র্যময়।