ডেঙ্গু জ্বর: এডিস মশা বাহিত একটি মারাত্মক রোগ
ডেঙ্গু জ্বর একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা, বিশেষ করে উষ্ণমণ্ডলীয় ও উপ-উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলে। এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়ায়। সংক্রমণের ৩-১৪ দিনের মধ্যে জ্বর, মাথাব্যথা, পেশি ও গাঁটে ব্যথা, ত্বকে ফুসকুড়ি সহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়। কিছু ক্ষেত্রে ডেঙ্গু মারাত্মক রক্তক্ষরণ ও শক সিন্ড্রোম সৃষ্টি করে, যা প্রাণঘাতী হতে পারে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান উপায় হলো মশা নিধন ও মশার কামড় এড়ানো। মশার বংশবৃদ্ধির উপযোগী জমে থাকা পানি নিষ্কাশন, মশা ঘরের ভিতরে না ঢুকতে মশারি ব্যবহার এবং মশা তাড়ানোর ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম, তরল পানীয় গ্রহণ ও পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করা অপরিহার্য। এন্টিবায়োটিক ও ননস্টেরয়েডাল প্রদাহনাশক ঔষধ সেবন করা যাবে না।
ডেঙ্গুর ইতিহাস:
১৭৭৯ সালে ডেঙ্গুর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ডেঙ্গু বৈশ্বিক মহামারীতে রূপ নিয়েছে। এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা, বাংলাদেশ সহ ১১০ টির বেশি দেশে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব হয়। প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় এবং হাজার হাজার মানুষ মারা যায়। ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন গবেষণা চলমান আছে।
জটিলতা:
ডেঙ্গু জ্বরের কিছু গুরুতর জটিলতা রয়েছে যেমন ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার (DHF) এবং ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম (DSS)। DHF রক্তক্ষরণ, রক্তের প্লেটলেট কমে যাওয়া এবং প্লাজমা লিকেজের কারণ হয়। DSS রক্তচাপের বিপজ্জনক হ্রাস ঘটায়। এই জটিলতাগুলি প্রাণঘাতী হতে পারে।
চিকিৎসা:
ডেঙ্গু জ্বরের কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। চিকিৎসা লক্ষণভিত্তিক, এবং তা রোগীর অবস্থার উপর নির্ভর করে। পর্যাপ্ত তরল সেবন, জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল, এবং প্রয়োজন হলে হাসপাতালে ভর্তি করে ইন্ট্রাভেনাস চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করার জন্য সচেতনতা ও সরকারী উদ্যোগ অপরিহার্য। সকলের উচিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।