মশা: এক অতি পরিচিত কিন্তু ভয়ঙ্কর প্রাণী
মশা (Mosquito) কুলিসিডি (Culicidae) পরিবারের ছোটো পতঙ্গ, যার অধিকাংশ প্রজাতির স্ত্রী মশা রক্ত খায়। পৃথিবীতে প্রায় ৩৫০০ প্রজাতির মশা আছে। বাংলাদেশে ১১৩ প্রজাতি শনাক্ত হয়েছে। মশার ৪৭টি দাঁত আছে। মশা শুধু রক্ত খেয়ে বাঁচে না, রক্তের প্রোটিন ডিম পাড়ার জন্য প্রয়োজন। পুরুষ মশা কখনো রক্ত খায় না এবং একদিনের বেশি বাঁচে না, যখন স্ত্রী মশা ৬-৮ সপ্তাহ বাঁচে। মশা ২৫০০ বছর ধরে পৃথিবীতে আছে।
মশা বিভিন্ন মারাত্মক রোগের বাহক: ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা ভাইরাস, পীতজ্বর, ফাইলেরিয়া ইত্যাদি। ম্যালেরিয়া বাহক Anopheles, ডেঙ্গু বাহক Aedes aegypti ও Ae. albopictus, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস বাহক Aedes প্রজাতি, এবং গোঁড়া বাহক Culex quinquefasciatus ও Mansonia প্রজাতির মশা।
মশার জীবনচক্র চার পর্যায়ে বিভক্ত: ডিম, লার্ভা, পিউপা, এবং পূর্ণবয়ষ্ক মশা। বেশিরভাগ মশা স্থির পানিতে ডিম পাড়ে; কিছু পানির কাছে বা জলজ উদ্ভিদে ডিম পাড়ে। ডিম থেকে পূর্ণবয়ষ্ক মশা হতে ৫ দিন থেকে ৪০ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। আবহাওয়া ও খাদ্যের উপর নির্ভর করে পূর্ণবয়ষ্ক মশার আকার ভিন্ন হয়।
মশা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পন্থা: কীটনাশক ছিটানো, মশারি ব্যবহার, লার্ভা নিধন, জলাশয় পরিষ্কার, জৈব পদ্ধতি (মশার প্রাকৃতিক শত্রু ব্যবহার), উদ্ভিদজাত দ্রব্য ব্যবহার ইত্যাদি। বাংলাদেশ সরকার মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তবে জলাশয় পরিষ্কার এবং সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।