জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী

খান বাহাদুর মোহাম্মদ জিয়াউল হক (১৮৯৫-১৯৫৮) বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ছিলেন। চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ থানার মুহাম্মদপুর গ্রামে ১৮৯৫ সালে জন্মগ্রহণকারী জিয়াউল হক কলকাতা মাদ্রাসা-ই-আলিয়া এবং ঢাকার মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার অধ্যক্ষ হিসেবে বিশেষ অবদান রেখেছেন। তিনি ১৯১৩ সালে চাহারাম কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে সরকারি টেলেন্টপুল বৃত্তি লাভ করেন। চট্টগ্রাম মিউনিসিপাল স্কুল থেকে এন্ট্রান্স এবং চট্টগ্রাম কলেজ থেকে বিএ পাস করার পর, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবিতে এবং ফার্সিতে এম.এ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯২৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ও ফার্সি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯২৬ সাল পর্যন্ত বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ফেনী কলেজ এবং কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে আরবি ও ফার্সির অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি রাজশাহী সরকারি মাদ্রাসা, হুগলি ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ এবং কলকাতা মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৭ সালে তাঁর নেতৃত্বে কলকাতা মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকায় স্থানান্তরিত হয় (বর্তমান কবি নজরুল সরকারি কলেজ)। ১৯৪৯ সালে পূর্ববাংলা প্রাদেশিক সরকারের গঠিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন শিক্ষা কমিটির সদস্য ছিলেন, যার সুপারিশ ছিল মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান। তিনি মাদ্রাসায় ইলমে কেরাত ও তাজবিদ বিভাগের প্রবর্তন করেন এবং ১৯৫৪ সালে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তার রচিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘হেদায়াতুন নাহু’, ‘Rhetorical Prosody’, এবং ‘আল-মুকতাতফ’। জিয়াউল হক পূর্ব বাংলা সরকারের মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রার, বেঙ্গল মাদ্রাসা বোর্ডের সহ-সভাপতি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল ও একাডেমিক কমিটির সদস্য, এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্য ছিলেন। ১৯৩৪ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে 'খান বাহাদুর' উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি ঢাকায় ‘মাওলা ব্রাদার্স’ নামে একটি পুস্তক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫৮ সালের ১৫ এপ্রিল ঢাকায় তার মৃত্যু হয়।

মূল তথ্যাবলী:

  • চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে জন্ম, ১৮৯৫
  • কলকাতা ও ঢাকা মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার অধ্যক্ষ
  • ১৯৪৭ সালে কলকাতা মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকায় স্থানান্তর
  • মাতৃভাষায় শিক্ষার পক্ষে জোরালো সমর্থন
  • ‘মাওলা ব্রাদার্স’ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা
  • ১৯৫৮ সালে ঢাকায় মৃত্যু

গণমাধ্যমে - জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী

21 ডিসেম্বর, 2024

জিয়াউল হক মাইজভান্ডারীর ৯৬তম খোশরোজ শরিফ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন।