জালাল উদ্দিন আহমদ

আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯:৩৩ এএম

জালাল উদ্দিন আহমদ নামটি একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কিত হওয়ায় বিভ্রান্তি এড়াতে, প্রতিটি জালাল উদ্দিন আহমদ সম্পর্কে পৃথকভাবে আলোচনা করা হলো।

১. কাজী জালাল উদ্দিন আহমদ (সমাজসেবক, শিক্ষাবিদ ও কলামিষ্ট):

১ জানুয়ারী ১৯৩০ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে জন্মগ্রহণকারী কাজী জালাল উদ্দিন আহমদ ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী সমাজসেবক, শিক্ষাবিদ ও কলামিষ্ট। তিনি ১৯৮৯ সালে প্রতিরক্ষা সচিব পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন ড. কাজী আজাহার উদ্দিন এবং মাতা ছিলেন কানিজ জোহুরা। তিনি মালদহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৪৬ সালে মেট্রিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫১ সালে রসায়নে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। পি.এস.সি. পাশ করে পাকিস্তান সরকারের সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন এবং পরবর্তীতে পাবনা জেলা প্রশাসক, যোগাযোগ সচিব ও শিক্ষা সচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন। শিক্ষা বিস্তারে তার উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে; রহনপুর ইউসুফ আলী কলেজে ‘কাজী জালাল উদ্দিন আহমদ বিজ্ঞান ভবন’ নির্মাণের মাধ্যমে তিনি শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রাখেন। তিনি ১৯৯২ সালে 'ADMINISTRATIVE LEADERSHIP' গ্রন্থ প্রকাশ করেন। ২৩ নভেম্বর ২০০৫ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

২. জালাল আহমদ (রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক):

কুমিল্লা জেলার রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জালাল আহমদ ২ জুলাই ১৯২১ সালে লাকসামের পাঁচপুকুরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব-পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-১৯ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী জালাল আহমদ আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত ছিলেন এবং লাকসাম থানা ও কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। বায়তুল মোকাররম মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৪ জানুয়ারী ২০০৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

৩. জালালউদ্দিন মুহম্মদ শাহ (পনেরো শতকের বাংলার সুলতান):

পনেরো শতকের বাংলার সুলতান জালালউদ্দিন মুহম্মদ শাহ হিন্দু ধর্মে জন্মগ্রহণ করেন এবং পরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৬ বছর বাংলার সুলতান হিসেবে শাসন করেন। তার শাসনামলে বাংলা সম্পদশালী ও জনবহুল হয়ে ওঠে। তিনি আরাকানকে বাংলার অধীনস্থ করেন এবং রাজ্যের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক কেন্দ্রগুলোকে সুসংহত করেন। তার রাজধানী ছিল গৌড়। ১৪৩৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

৪. জালাল উদ্দিন আহমেদ (বাগেরহাটের সিভিল সার্জন):

এই জালাল উদ্দিন আহমেদ সম্পর্কে সাম্প্রতিক একটি খবরে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তিনি বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ছিলেন এবং 'জয় বাংলা' স্লোগান দেওয়ার ঘটনায় তাকে ওএসডি করা হয়েছে।

৫. জালাল উদ্দিন আহমেদ (শিল্পপতি ও স্বনামধন্য ব্যবসায়ী):

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে জন্মগ্রহণকারী এই জালাল উদ্দিন আহমেদ একজন শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে জি.পি. শীটের ব্যবসায় প্রচুর সুনাম অর্জন করেন, এজন্য তাকে জিপি জালাল বলা হতো। ১৯৮৭ সালে তিনি সম্পূর্ণ নিজ খরচে জালাল উদ্দিন কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৬ সালের ২১শে এপ্রিল তিনি মারা যান।

মূল তথ্যাবলী:

  • কাজী জালাল উদ্দিন আহমদ: প্রখ্যাত সমাজসেবক, শিক্ষাবিদ ও কলামিষ্ট
  • জালাল আহমদ: মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও রাজনীতিবিদ
  • জালালউদ্দিন মুহম্মদ শাহ: ১৫শ শতকের বাংলার সুলতান
  • জালাল উদ্দিন আহমেদ: বাগেরহাটের সাবেক সিভিল সার্জন
  • জালাল উদ্দিন আহমেদ: নোয়াখালীর শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - জালাল উদ্দিন আহমদ

বাজালিয়া সমিতির মেধা বৃত্তি পরীক্ষায় পরীক্ষা উপকমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।