জাতীয় নিরাপত্তা বলতে আমরা সাধারণত একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাকে বুঝি। এটি নাগরিক, অর্থনীতি এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারের দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করে। জাতীয় নিরাপত্তার অন্তর্গত বিভিন্ন দিক রয়েছে, যেমন সামরিক আক্রমণ থেকে সুরক্ষা, সন্ত্রাসবাদ থেকে নিরাপত্তা, অপরাধ হ্রাস, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, পরিবেশ নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা ইত্যাদি। জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকিও বিভিন্ন উৎস থেকে আসতে পারে, যেমন অন্যান্য রাষ্ট্রের ক্রিয়াকলাপ, সহিংস অরাষ্ট্রীয় নেতাদের পদক্ষেপ, মাদক, অপরাধ, বহুজাতিক কর্পোরেশন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে, জাতীয় নিরাপত্তা আরও জটিল এবং বহুমাত্রিক। এখানে ভৌগোলিক অবস্থান, প্রতিবেশী দেশের সাথে সম্পর্ক, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ভারত ও মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তা, রোহিঙ্গা সংকট, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড, এবং অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। অভ্যন্তরীণভাবে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক অবস্থা, এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য।
জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন সংস্থা কাজ করে, যেমন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (NSI), প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (DGFI), পুলিশের বিশেষ শাখা (SB), এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে গোয়েন্দা সংগ্রহ, কাউন্টার-টেররিজম, অপরাধ দমন, এবং VIP নিরাপত্তা। এই সংস্থাগুলোর কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার মাধ্যমে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে জাতীয় নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করা সম্ভব।
শেষ কথায়, জাতীয় নিরাপত্তা একটি জটিল ও গতিশীল বিষয় যা বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও ভবিষ্যতের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। এই নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকার, সামরিক বাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সাধারণ জনগণের সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন।