বাংলাদেশের জলসীমা: একটি ব্যাপক আলোচনা
বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই বঙ্গোপসাগরের জলসীমা নিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব ও অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা অব্যাহত ছিল। ১৯৭৪ সালে ‘রাষ্ট্রীয় জলসীমা ও সামুদ্রিক এলাকা আইন’ (The Territorial Waters and Maritime Zones Act, 1974) প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ১২ নটিক্যাল মাইল রাষ্ট্রীয় জলসীমা এবং ২০০ নটিক্যাল মাইল একান্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল (EEZ) চিহ্নিত করে। এই আইনে মহীসোপান (Continental Shelf) এর বিস্তার সম্পর্কেও উল্লেখ রয়েছে, যা দেশের সমুদ্রসীমার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
বাংলাদেশের উপকূলীয় রেখা অস্থিতিশীল এবং নদী থেকে প্রচুর পলি জমার কারণে সমুদ্রের গভীরতা ক্রমাগত পরিবর্তনশীল। এ কারণে সমুদ্রসীমা নির্ধারণে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিশেষ করে, হাড়িভাঙ্গা এবং রাইমঙ্গল নদীর মোহনায় জেগে ওঠা দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ (বাংলাদেশে দক্ষিণ তালপট্টি ও ভারতে নিউ মুর নামে পরিচিত) নিয়ে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ ছিল।
২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নির্ধারিত হয় এবং বাংলাদেশ প্রায় ১,১৮,৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমুদ্রাঞ্চলের মালিকানা লাভ করে। তবে, হাড়িভাঙ্গা ও রাইমঙ্গল নদীর মোহনার দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ নিয়ে কিছু বিষয় এখনও অনিশ্চিত।
১৯৮২ সালের সমুদ্র আইন সংক্রান্ত জাতিসংঘের কনভেনশন অনুসারে সমুদ্রসীমা নির্ধারিত হয়। বাংলাদেশ এই কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে, কিন্তু এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করেনি। সমুদ্রসীমা নির্ধারণ ও এর সুরক্ষা বিষয়ে বাংলাদেশ সময়ের সাথে সাথে আইন ও নীতিমালা আপডেট ও সংশোধন করে চলেছে। আগামীতে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেলে আমরা আপনাদের অবহিত করব।