চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ: বাংলাদেশের চিকিৎসাশাস্ত্রের এক অমূল্য সম্পদ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহরে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী ও খ্যাতনামা সরকারি মেডিকেল কলেজ। ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এটি দেশের চিকিৎসা শিক্ষার ক্ষেত্রে অতুলনীয় অবদান রেখে আসছে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রাচীনতম এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম মেডিকেল কলেজ হিসেবে চমেকের সুনাম আন্তর্জাতিক পর্যন্ত পৌঁছেছে।
ঐতিহাসিক পটভূমি:
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের প্রাঙ্গণে ১৯২৭ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল স্কুল হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ১৯৫৭ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত এর উদ্বোধন করেন। ডা. আলতাফ উদ্দীন আহমেদ ছিলেন প্রথম অধ্যক্ষ। ১৯৬০ সালে বর্তমান ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়। প্রথমে মাত্র ২৬ জন শিক্ষক এবং ৭৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে কলেজটির যাত্রা শুরু হয়।
শিক্ষা ও গবেষণা:
চমেকে ৫ বছর মেয়াদী এমবিবিএস কোর্স, ডেন্টাল ইউনিটের বিডিএস কোর্স এবং বিভিন্ন স্নাতকোত্তর কোর্স যেমন এম.ডি., এম.এস., এমফিল, ডিপ্লোমা, এমপিএইচ চালু রয়েছে। প্রতিবছর এমবিবিএসে প্রায় ২৫০ জন এবং বিডিএসে ৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। আধুনিক প্রযুক্তি, যেমন MRI, CT স্ক্যান, ডিএনএ টেস্টিং এখানে ব্যবহার করা হয়। ৩৫ টি বিভাগের সাথে এটি একটি বৃহৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল:
চমেক হাসপাতাল কলেজের সাথে সম্পর্কিত ২২০০ শয্যা বিশিষ্ট একটি তৃতীয় পর্যায়ের হাসপাতাল। চিকিৎসা শিক্ষার ব্যবহারিক দিকটি এখানে প্রয়োগ করা হয়। এটি বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস্ এন্ড সার্জনস্ এবং অন্যান্য নার্সিং কলেজ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত।
উল্লেখযোগ্য দিক:
- শহীদ মিনার
- ‘শাহ আলম বীর উত্তম মিলনায়তন’ (হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন)
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ বাংলাদেশের চিকিৎসা শিক্ষার অগ্রদূত। এটি শুধুমাত্র চিকিৎসা শিক্ষা প্রদান করে না, বরং দক্ষ চিকিৎসক তৈরির মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্য সেবায় অবদান রাখছে। এটির ঐতিহ্য, অবকাঠামো এবং শিক্ষা মান এটিকে দেশের অন্যতম সেরা মেডিকেল কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।