চট্টগ্রামের ডবলমুরিং

আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২:১৬ পিএম

চট্টগ্রামের ডবলমুরিং: একটি ঐতিহাসিক ও ব্যবসায়িক কেন্দ্র

চট্টগ্রাম মহানগরীর অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ডবলমুরিং। এটি কেবলমাত্র একটি থানা নয়, বরং ঐতিহাসিক ঘটনাবলী, ব্যবসায়িক কার্যকলাপ এবং জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণে চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। ব্রিটিশ আমলে দুটি মুরিং ঘাটের স্থাপনার পর থেকেই এর নামকরণ ডবলমুরিং হয়েছে। ১৮৬০ সালে প্রথম দুটি এবং ১৮৮৮ সালে আরও দুটি জেটি স্থাপনের ফলে এলাকাটিতে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে এবং ধীরে ধীরে এটি বৃহৎ জনবসতিপূর্ণ এলাকায় পরিণত হয়।

ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন অঞ্চলে অবস্থিত ডবলমুরিং থানার আয়তন প্রায় ৮.০৬ বর্গ কিলোমিটার। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এর জনসংখ্যা ছিল ২৮৯০৪৭ জন, যার মধ্যে পুরুষ ১৬৩২৫৮ এবং মহিলা ১২৫৭৮৯। মুসলিম ২৫২০৩১, হিন্দু ২৬০০১, বৌদ্ধ ১১৬২, খ্রিস্টান ৮৪১০ এবং অন্যান্য ১৪৪৩ জন। কর্ণফুলী নদী ডবলমুরিং এর দক্ষিণ সীমানা। উত্তরে খুলশী ও কোতোয়ালী থানা, পূর্বে কোতোয়ালী থানা, এবং পশ্চিমে পাহাড়তলী, হালিশহর ও বন্দর থানা অবস্থিত। ২০২১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং তা আরও বৃহৎ হয়েছে।

অর্থনৈতিক কার্যকলাপ:

ডবলমুরিং চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্র। এখানে প্রচুর সংখ্যক গার্মেন্টস শিল্পসহ বিভিন্ন ধরণের শিল্প কলকারখানা রয়েছে। ২০০৭ সালের তথ্য অনুযায়ী, এখানে ১৭৪ টি গার্মেন্টস শিল্প ছিল। ব্যবসায়ের পাশাপাশি পরিবহন ও যোগাযোগ, নির্মাণ, চাকরি, এবং অন্যান্য ক্ষেত্রগুলিতেও ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। দেওয়ানহাট, মোগলটুলী হাট, চৌমুহনী হাট, কর্ণফুলী সিটি কর্পোরেশন মার্কেট, দারোগাহাট এবং লাকী প্লাজা, সাউথ ল্যান্ড, সিঙ্গাপুর মার্কেট ইত্যাদি হাটবাজার ও শপিং কমপ্লেক্স ডবলমুরিং এর অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও মুক্তিযুদ্ধ:

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ডবলমুরিং থানা ছিল নৌ-কমান্ডোদের অধীন। মুক্তিযোদ্ধারা এখানে বেশ কয়েকটি সফল অভিযান পরিচালনা করেন। এছাড়াও, বেপারী পাড়া ও হাজী পাড়ায় পাকসেনারা নিরীহ মানুষদের হত্যা করে। ভেলুয়ার দিঘি এই এলাকার একটি প্রাচীন নিদর্শন।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য:

ডবলমুরিং শিক্ষার দিক থেকেও উন্নত। এখানে অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা এবং এতিমখানা অন্তর্ভুক্ত। আগ্রাবাদ কমার্স কলেজ, সিটি কলেজ, ইসলামিয়া কলেজ, আগ্রাবাদ মহিলা কলেজ, আসমা খাতুন সিটি কর্পোরেশন স্কুল এন্ড কলেজ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, স্বাস্থ্যসেবার জন্য এখানে একটি হাসপাতাল রয়েছে।

উল্লেখযোগ্য স্থাপনা:

বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম, আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর, বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ডবলমুরিং-এ অবস্থিত।

মূল তথ্যাবলী:

  • চট্টগ্রাম মহানগরীর একটি গুরুত্বপূর্ণ থানা
  • ব্রিটিশ আমলে দুটি মুরিং ঘাটের নামানুসারে নামকরণ
  • ব্যবসা-বাণিজ্য এবং জনবসতির ঘনত্বের কারণে গুরুত্বপূর্ণ
  • মুক্তিযুদ্ধে নৌ-কমান্ডোদের অধীনে ছিল
  • অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল রয়েছে

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - চট্টগ্রামের ডবলমুরিং

২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

জিয়া বিন কাশেমকে এখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।