শহীদ কাদরী: একজন নাগরিক কবির জীবন ও কাব্য
১৪ আগস্ট, ১৯৪২ সালে কলকাতার পার্ক সার্কাসে জন্মগ্রহণকারী শহীদ কাদরী বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট কবি ও লেখক ছিলেন। তার জন্মের সময় তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের অধীনে ছিল কলকাতা। শৈশবের দশ বছর কলকাতাতেই কাটে তার। ১৯৫২ সালে দশ বছর বয়সে তিনি ঢাকায় চলে আসেন এবং প্রায় তিন দশক ঢাকায় অবস্থান করার পর ১৯৭৮ সালে প্রবাসী জীবন শুরু করেন। বার্লিন, লন্ডন, বোস্টন ঘুরে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিউইয়র্কে বসবাস করেন। ২৮ আগস্ট, ২০১৬ সালে ৭৪ বছর বয়সে নিউ ইয়র্কের নর্থ শোর বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
শহীদ কাদরী ১৯৪৭-পরবর্তীকালের বাঙালি কবিদের মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব যিনি নাগরিক-জীবন-সম্পর্কিত শব্দ-চয়নের মাধ্যমে বাংলা কবিতায় নাগরিকতা ও আধুনিকতাবোধের নতুন মাত্রা যোগ করেন। আধুনিক নাগরিক জীবনের প্রাত্যহিক অভিব্যক্তি ও অভিজ্ঞতাকে তিনি তার কবিতায় অসাধারণভাবে রূপ দিয়েছেন। দেশপ্রেম, অসাম্প্রদায়িকতা, বিশ্ববোধ, প্রকৃতি এবং নগর জীবনের বিভিন্ন দিক তার কবিতার মূল উপাদান। শহর ও তার সভ্যতার বিকার তার কাব্যে স্পষ্ট। তার কবিতায় অনুভূতির গভীরতা, চিন্তার সূক্ষ্মতা এবং রূপগত পরিচর্যার এক অসাধারণ সমন্বয় দেখা যায়।
তার চারটি প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ রয়েছে: ‘উত্তরাধিকার’ (১৯৬৭), ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’ (১৯৭৪), ‘কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই’ (১৯৭৮) এবং ‘আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও’ (২০০৯)। এই চারটি গ্রন্থে মোট ১২২টি কবিতা সন্নিবেশিত রয়েছে। এছাড়াও, পরবর্তীতে তিনি আরও চারটি কবিতা লিখেছেন যার তিনটি ‘কালি ও কলম’ সাহিত্য পত্রিকায় এবং একটি ‘প্রথম আলো’ ঈদ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। সুতরাং, তার মোট কবিতার সংখ্যা ১২৬টি।
শহীদ কাদরী বাংলা কবিতায় অবদানের জন্য ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ২০১১ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক লাভ করেন। এগারো বছর বয়সে, ১৯৫৩ সালে ‘পরিক্রমা’ শিরোনামে তার প্রথম কবিতা ‘স্পন্দন’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এরপর ‘জলকন্যার জন্য’ শিরোনামে আরেকটি কবিতা লিখে একই পত্রিকায় প্রকাশ করেন।
শহীদ কাদরী শুধুমাত্র একজন বিশিষ্ট কবিই ছিলেন না, তিনি একজন সম্পূর্ণ নাগরিক কবি ছিলেন, যার কাব্যে শহুরে জীবনের স্পর্শ স্পষ্ট। তিনি আধুনিকতাকে সঞ্চারিত করে বাংলা কবিতাকে নতুন স্পন্দন দিয়েছেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ: পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস গবেষণা
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তার এ গবেষণায় স্বাধীনতা-পরবর্তী পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনাবলী, বিশেষ করে সশস্ত্র আন্দোলনের উত্থান ও বিকাশ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় উঠে এসেছে ঐ সময়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাব এবং স্থানীয় নেতৃত্বের ভূমিকা। তিনি রাঙ্গামাটির কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের ফলে সৃষ্ট সমস্যা এবং পাকিস্তান সরকারের নীতির ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে উদ্ভূত পরিস্থিতি ও বিশ্লেষণ করেছেন। গোলাম মহিউদ্দিন ১৯৭৫ সালের ২৮ জানুয়ারি ঢাকা জেলার সাভারে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০৩ পদাতিক ব্রিগেড খাগড়াছড়ি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার হিসেবে কর্মরত আছেন।