মৌলভীবাজারের বড়লেখায় চা শ্রমিক গোপাল বাক্তির গুলিবিদ্ধ মৃত্যু: এক ভয়াবহ ঘটনার বর্ণনা
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের জিরো লাইন থেকে এক চা শ্রমিকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধারের ঘটনায় সারা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতের নাম গোপাল বাক্তি (৩৬)। রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, দুপুরে বিজিবি ও পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। গোপাল বড়লেখা উপজেলার নিউ সমনবাগ চা বাগানের মোকাম সেকশনের সাবেক ইউপি সদস্য অকিল বাক্তির পুত্র ছিলেন।
- *ঘটনার বর্ণনা:**
গত শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, গোপাল বাক্তি সহ আরও কয়েকজন শ্রমিক পাথারিয়া পাহাড় থেকে বাঁশ আনতে যান। রাত পর্যন্ত বাড়ি ফিরে না আসায় তার স্বজনরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরদিন ভোরে খবর পান বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের বিওসি টিলা বিওপির আওতাধীন সীমান্ত পিলার ১৩৯১ ও ১৩৯২ এর মধ্যবর্তী জিরো লাইনের কাছে (গভীর জঙ্গলে) একটি লাশ পড়ে আছে। বিজিবি এবং থানা পুলিশ স্বজনদের সাথে গিয়ে নিহত গোপালের লাশ শনাক্ত করেন।
- *স্বজনদের অভিযোগ:**
গোপালের স্বজনদের অভিযোগ, অসাবধানতাবশত সীমান্তের জিরো লাইনের কাছে চলে যাওয়ার ফলে বিএসএফ (ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী) তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। গোপালের সাথে যাওয়া অন্য শ্রমিকরা বিএসএফ এর গুলির ভয়ে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পেয়েছিল। নিহতের দেহে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।
- *প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য:**
গোপালের সাথে থাকা শ্রমিকদের বরাত দিয়ে বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ইমরান আহমদ জানান, বিএসএফ-এর গুলিতে গোপাল নিহত হন। ভয়ে অন্যান্য শ্রমিকরা আর কিছু বলতে পারেননি।
- *বিজিবি ও পুলিশের বক্তব্য:**
বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মেহেদী হাসান পিপিএম জানান, সীমান্ত পিলার ১৩৯১/২-এস থেকে প্রায় ২০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে লাশটি পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করা যায়নি, তবে দেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল কাইয়ূম জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনায় সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার দাবি উঠেছে। গোপালের পরিবারের ন্যায়বিচারের দাবিও তীব্র হয়ে উঠেছে।