গুলশান অ্যাভিনিউ: ঢাকার অভিজাত বাণিজ্যিক কেন্দ্রের উত্থান
ঢাকার গুলশান অ্যাভিনিউ শুধুমাত্র একটি সড়ক নয়, বরং এটি ঢাকার অভিজাত ও গুরুত্বপূর্ণ একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। গত দেড় দশকে মতিঝিলের পর গুলশান অ্যাভিনিউ দেশের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। এখানে দেশের অধিকাংশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, করপোরেট প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক কোম্পানি এবং দেশীয় শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক শিল্পগোষ্ঠীর প্রধান বা আঞ্চলিক কার্যালয় অবস্থিত।
গুলশান অ্যাভিনিউর দুই পাশে দৃষ্টিনন্দন বহুতল ভবন নির্মাণের ফলে এটি একটি আধুনিক ও উন্নত বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। তবে, আবাসিক ভবনের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বাণিজ্যিক কেন্দ্রের সম্প্রসারণের সুযোগ সীমিত। এই কারণে বাণিজ্যিক কার্যকলাপের প্রসারণ তেজগাঁও-গুলশান সংযোগ সড়কে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই সড়কে দেশের সর্বোচ্চ উচ্চতার বাণিজ্যিক ভবনসহ অনেক বহুতল ভবন নির্মাণাধীন অথবা ইতোমধ্যে নির্মিত। এছাড়াও, এখানে পোশাক, গাড়ি, আসবাবপত্রের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের বিক্রয়কেন্দ্র, রেস্তোরাঁ, পাঁচ তারকা হোটেল এবং হাসপাতাল রয়েছে। হাতিরঝিলের কারণে যোগাযোগব্যবস্থারও উন্নতি হয়েছে।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের ইতিহাসের সাথে গুলশান অ্যাভিনিউর উন্নয়নের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। পঞ্চাশের দশকে ৫০০ একর ২০ শতাংশ জায়গার উপর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল স্থাপন করা হয়। ১৯৯৮ সালে তেজগাঁও-গুলশান সংযোগ সড়ককে ‘বাণিজ্যিক সড়ক’ ঘোষণা করা হয়। ২০১৫ সালে শিল্পাঞ্চলের চরিত্র পাল্টে শিল্প-বাণিজ্য-আবাসন—এই তিনের মিশেলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার অনুমোদন দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এর পর থেকেই এলাকাটি দ্রুততার সাথে পরিবর্তিত হতে থাকে। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান ঢাকার আশেপাশে স্থানান্তরিত হওয়ায়, গুলশান অ্যাভিনিউ ও তেজগাঁও-গুলশান সংযোগ সড়ক নতুন বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছে।
গুলশান অ্যাভিনিউতে বইমেলার আয়োজনের তথ্যও উল্লেখযোগ্য। মহান বিজয়ের মাসের শুরুতে ২৮ গুলশান অ্যাভিনিউয়ে সিটি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ‘সিটি ব্যাংক সেন্টার’–এ ‘সিটি ব্যাংক-প্রথমা বইমেলা’ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
গুলশান অ্যাভিনিউর ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং এর সাথে সম্পর্কিত পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে আরও বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করতে পারব।