গিয়াসউদ্দীন আহমদ

আপডেট: ৫ জানুয়ারী ২০২৫, ৮:২৬ এএম

গিয়াসউদ্দীন আহমেদ: একজন শহীদ বুদ্ধিজীবী

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক নিহত বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে গিয়াসউদ্দীন আহমেদ অন্যতম। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের একজন সম্মানিত সহকারী অধ্যাপক এবং হাজী মুহম্মদ মহসীন হলের আবাসিক শিক্ষক। ১৯৩৩ সালের ১১ আগস্ট নরসিংদী জেলার বেলাব গ্রামে জন্মগ্রহণকারী গিয়াসউদ্দীন, ছাত্রজীবনে সেন্ট গ্রেগরীজ হাইস্কুল ও নটরডেম কলেজে অসাধারণ শিক্ষাগত সাফল্য অর্জন করেন। ১৯৫৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন এবং পরবর্তীতে জগন্নাথ কলেজে শিক্ষকতা করার পর ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে যোগ দেন। ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্সে কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। ইউরোপ এবং সমকালীন বিশ্বের ইতিহাসে তিনি ছিলেন বিশেষজ্ঞ। তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়, স্পষ্টবাদী, কর্মঠ ও নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

রাজনৈতিক কর্মী না হলেও গিয়াসউদ্দীন জাতীয় ইস্যুতে সবসময়ই সোচ্চার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেন, আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন এবং অন্যান্য সহযোগিতা প্রদান করেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাঁকে দু'বার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করেছিল। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মহসীন হল থেকে অপহরণ করে এবং ২০ দিন পর রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ প্রাঙ্গণে তাকে সমাহিত করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার করে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে। গিয়াসউদ্দীন আহমেদের আত্মত্যাগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক
  • নরসিংদী জেলার বেলাব গ্রামে জন্ম
  • পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে অপহরণ ও হত্যা
  • মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের গোপনে সাহায্য

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।