গাজী টায়ারস: অগ্নিকাণ্ড, লুটপাট ও নিখোঁজের রহস্য
২০২৪ সালের ২৫শে আগস্ট, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসীতে অবস্থিত গাজী টায়ারস কারখানায় সংঘটিত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও লুটপাটের ঘটনা দেশবাসীর মনে গভীর আঘাত হানে। এই ঘটনার পর থেকেই অন্তত ১৮২ জন নিখোঁজ হওয়ায় সারাদেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
গাজী টায়ারস কারখানাটির মালিক আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ও নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী। তার গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই কারখানায় লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
প্রায় ৪০ ঘণ্টা ধরে কারখানাটিতে আগুন জ্বলে। টানা পাঁচ দিন ধরে আগুন জ্বলার পর ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে আগুন জ্বলার কারণে কারখানার ভবনটি ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হয়।
জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনাটি তদন্ত করে। কমিটির প্রতিবেদনে ১৮২ জন নিখোঁজ ব্যক্তির তালিকা দেওয়া হলেও, তাদের মৃত্যু হয়েছে কি না, নাকি অন্য কোথাও আছেন সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রশাসনের তরফ থেকে নিখোঁজদের উদ্ধার ও সন্ধানে নানা উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হলেও, উল্লেখযোগ্য সাফল্য এখনো অর্জিত হয়নি। নিখোঁজদের স্বজনদের দীর্ঘ প্রতীক্ষা ও দুঃখ কষ্টের কথাও উল্লেখযোগ্য।
বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল কারখানার ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি পরিদর্শন করে উদ্ধার অভিযানের ঝুঁকিপূর্ণতা নিয়ে সতর্ক করে।
এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতা ও সহায়তায় দেরি নিয়েও অভিযোগ রয়েছে।
গাজী টায়ারস কারখানা ঘটনাটি দেশের শিল্প, নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।