কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৭ পিএম

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া: একটি বিস্তারিত বিবরণ

বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা হল পাকুন্দিয়া। ১৮০.৫২ বর্গকিলোমিটার (৬৯.৭০ বর্গমাইল) আয়তনের এই উপজেলায় প্রায় ২,৩৭,২১৮ জন মানুষ বসবাস করে। ১৯২২ সালে থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, ১৯৮৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।

ভৌগোলিক অবস্থান ও সীমানা:

পাকুন্দিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার একটি সীমান্তবর্তী উপজেলা। উত্তরে হোসেনপুর ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা, দক্ষিণে গাজীপুরের কাপাসিয়া ও নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা, পূর্বে কটিয়াদী উপজেলা এবং পশ্চিমে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা পাকুন্দিয়াকে ঘিরে রয়েছে। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী এ উপজেলার প্রধান নদী। এছাড়াও, সিংগুয়া নামে একটি নদী বিল মইসবের থেকে কালিয়াচাপড়া হয়ে জেলার ভাটি এলাকা নিকলীর সাথে ঘোড়াউত্রা নদীতে মিশেছে।

প্রশাসনিক বিভাগ:

৯টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এই উপজেলা কিশোরগঞ্জ শহর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। কিশোরগঞ্জ জেলা সদর থেকে পাকুন্দিয়া উপজেলা সদরের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। সড়কপথই যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। রেল যোগাযোগের সুবিধা নেই।

জনসংখ্যার উপাত্ত:

পাকুন্দিয়া উপজেলার মোট জনসংখ্যা প্রায় ২,৩৭,২১৮। এর মধ্যে পুরুষ ৫১.২৬% এবং মহিলা ৪৮.৭৪%। ধর্মীয় দিক থেকে ৯৫.৭৫% মুসলমান এবং ৪.২৫% হিন্দু।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:

উপজেলায় অনেক স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য কলেজগুলির মধ্যে রয়েছে পাকুন্দিয়া আদর্শ মহিলা কলেজ, পাকুন্দিয়া সরকারি কলেজ, হোসেন্দী আদর্শ কলেজ, হাজী জাফর আলী কলেজ, শিমুলিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ, চর আদর্শ কলেজ এবং চরটেকী গার্লস কলেজ। উল্লেখযোগ্য মাদ্রাসাগুলির মধ্যে রয়েছে পাঁচলগোটা সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা, শৈলজানী আলিম মাদ্রাসা এবং মঙ্গলবাড়িয়া কামিল মাদ্রাসা।

অর্থনীতি:

পাকুন্দিয়া উপজেলা সবজির জন্য বিখ্যাত। এখানে প্রচুর সবজি ও ফল উৎপাদিত হয় যা সারা দেশে বিক্রি হয়। মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু এর জন্য বিখ্যাত। কালিয়া চাপড়া চিনিকল (বিলুপ্ত) বর্তমানে নিটল-‌নিলয় চিনিকল হিসেবে বেসরকারী পর্যায়ে চালু আছে। এছাড়াও, ডেল্টা ফার্মাসিউটিক্যাল নামে একটি ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, দুইটি কোল্ড স্টোরেজ (এগারসিন্দুর কোল্ডস্টোরেজ, পূর্বাচল হিমাগার), এবং সরকারি বিএডিসি স্টোরেজ, একটি ময়দা ফ্যাক্টরি এবং অটোরাইসমিল আছে।

ঐতিহাসিক স্থান:

বারো ভূইয়াঁদের অন্যতম ঈসা খাঁর দুর্গ হিসেবে পরিচিত এগারসিন্দুর এবং শালংকার আওরঙ্গজেব মসজিদ পাকুন্দিয়ার ঐতিহাসিক স্থান। এছাড়াও রয়েছে বেবুধ রাজার পুকুর এবং রাজবাড়ী (মির্জাপুর)।

নদ-নদী:

পাকুন্দিয়া উপজেলায় ৪টি নদী রয়েছে: পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী, বানার লোয়ার নদী, ঘোড়াউত্রা নদী এবং নরসুন্দা নদী।

উপসংহার:

পাকুন্দিয়া উপজেলা কিশোরগঞ্জ জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব, ভৌগোলিক সৌন্দর্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা একে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল করে তুলেছে। এই সংক্ষিপ্ত বিবরণে পাকুন্দিয়ার সম্পূর্ণ তথ্য দেওয়া সম্ভব হয়নি। আমরা আশা করি ভবিষ্যতে আরও তথ্য সংযোজন করে একে আরও সমৃদ্ধ করা সম্ভব হবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • পাকুন্দিয়া কিশোরগঞ্জের একটি উপজেলা
  • আয়তন প্রায় ১৮০.৫২ বর্গকিলোমিটার
  • জনসংখ্যা প্রায় ২,৩৭,২১৮
  • ১৯২২ সালে থানা, ১৯৮৩ সালে উপজেলা
  • পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী প্রধান নদী
  • সবজি ও লিচু চাষের জন্য বিখ্যাত
  • এগারসিন্দুর দুর্গ ঐতিহাসিক স্থান

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া

৪ জানুয়ারী ২০২৫, ৬:০০ এএম

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতির ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী পালিত হয়।