কাদের মির্জা: রাজনীতি, আইন, এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি
কাদের মির্জা, বাংলাদেশের রাজনীতি ও আইনক্ষেত্রের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। ১৮৯১ সালে ঠাকুরগাঁও জেলার আটোয়ারী থানার মির্জাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতা উজির আলী মুস্তাজির ছিলেন একজন ভূস্বামী। কাদের মির্জা মির্জাপুর স্কুল, জলপাইগুড়ি জিলা স্কুল এবং কলকাতা প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে শিক্ষা লাভ করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ এবং বি.এল ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯১৬ সালে দিনাজপুর শহরে আইন ব্যবসা শুরু করেন।
তার রাজনৈতিক জীবন ছিল বেশ সমৃদ্ধ। ১৯২৩ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত তিনি বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য থাকেন। ১৯৩৩ সালে দিনাজপুরে প্রতিষ্ঠিত খাজা নাজিমউদ্দিন মুসলিম হল অ্যান্ড লাইব্রেরির ভাইস-প্রসিডেন্ট ছিলেন। দিনাজপুর জেলা মুসলিম লীগ কমিটির প্রতিষ্ঠা ও আমৃত্যু সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। দিনাজপুর জেলা বোর্ডের একজন প্রভাবশালী সদস্য হিসেবেও কাজ করেন এবং ১৯৩৯ সালে দিনাজপুর পৌরসভার প্রথম মুসলমান ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৩৮ সালে রেলওয়ে বোর্ডের সদস্য ও ১৯৪০ সালে দিনাজপুর জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৪৫ সালের অক্টোবরে ভারতের বিহার প্রদেশের (বর্তমান ঝাড়খন্ড) মধুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়।
ক্যাপ্টেন মির্জা আফতাব:
কাদের মির্জার পরিবারের আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ক্যাপ্টেন মির্জা আফতাব (১৯৪৮-১৯৭১), একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণকারী আফতাব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন এবং বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে ১৯৭১ সালে শহীদ হন। বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে।
কাদের মির্জা ও ক্যাপ্টেন মির্জা আফতাব উভয়ই বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন – একজন রাজনীতি ও আইন জগতে, অপরজন মুক্তিযুদ্ধের মাঠে।