কাজী ইমদাদুল হক

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৭ পিএম
নামান্তরে:
কাজি ইমদাদুল হক
কাজী ইমদাদুল হক

কাজী ইমদাদুল হক: একজন অসাধারণ শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক

কাজী ইমদাদুল হক (৪ নভেম্বর ১৮৮২ – ২০ মার্চ ১৯২৬) ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের একজন বিশিষ্ট বাঙালি লেখক ও শিক্ষাবিদ। তিনি বাংলা সাহিত্যে অমূল্য অবদান রেখেছেন এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে তার অবদান অসাধারণ। তার জন্ম বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির খুলনার পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর গ্রামে (বর্তমান বাংলাদেশ)। পিতা কাজী আতাউল হক আসামের জরিপ বিভাগে চাকরি করতেন এবং পরবর্তীতে খুলনার ফৌজদারি আদালতের মোক্তার নিযুক্ত হন।

শিক্ষা জীবনে কাজী ইমদাদুল হক ১৯০০ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিএ এবং ১৯১৪ সালে বিটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯০৪ সালে কলকাতা মাদ্রাসায় (বর্তমান আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়) শিক্ষকতা শুরু করেন। এরপর ১৯০৬ সালে আসামের শিলংয়ে শিক্ষা বিভাগে উচ্চমান সহকারী হিসেবে যোগ দেন। ১৯০৭ সালে ঢাকা মাদ্রাসার শিক্ষক, ১৯১১ সালে ঢাকা শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজের ভূগোলের অধ্যাপক এবং ১৯১৪ সালে ঢাকা বিভাগের মুসলিম শিক্ষা সহকারী স্কুল পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯১৭ সালে তিনি কলকাতা ট্রেনিং স্কুলের প্রধান শিক্ষক হন। ১৯২১ সালে সদ্য প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বোর্ডের সুপারিন্টেনডেন্ট হিসেবে যোগদান করেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত এই পদে ছিলেন।

শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ব্রিটিশ সরকার ১৯১৯ সালে তাকে খান সাহেব এবং ১৯২৬ সালে খান বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত করে। সাংবাদিকতায়ও তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। তার সম্পাদনায় 'নবনূর' (১৯০৩-১৯০৬) ও 'শিক্ষক' (১৯২০-১৯২৩) পত্রিকা প্রকাশিত হত। 'বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা' প্রকাশের কমিটির সভাপতিও ছিলেন তিনি।

সাহিত্যে তার অবদানও অসামান্য। তিনি কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ ও শিশুসাহিত্য রচনা করেছেন। 'আবদুল্লাহ' উপন্যাসটি তার সবচেয়ে বিখ্যাত রচনা। তার অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'অাঁখিজল', 'মোসলেম জগতে বিজ্ঞান চর্চা', 'ভূগোল শিক্ষা প্রণালী', 'নবীকাহিনী', 'প্রবন্ধমালা', 'কামারের কান্ড' ইত্যাদি।

কাজী ইমদাদুল হক বাংলার মুসলিম সমাজের উন্নয়নের জন্য সাহিত্য ও শিক্ষার মাধ্যমে কাজ করে গেছেন। তার পুত্র কাজী আনোয়ারুল হকও ছিলেন একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি। কাজী ইমদাদুল হক ১৯২৬ সালের ২০ মার্চ কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

মূল তথ্যাবলী:

  • কাজী ইমদাদুল হক ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাঙালি লেখক ও শিক্ষাবিদ।
  • তিনি বাংলা সাহিত্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে অমূল্য অবদান রেখেছেন।
  • তার বিখ্যাত রচনা 'আবদুল্লাহ' উপন্যাস।
  • তিনি 'নবনূর' ও 'শিক্ষক' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।
  • ব্রিটিশ সরকার তাকে খান সাহেব ও খান বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত করেছিল।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।