কসবা

কসবা: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা শহর

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্গত কসবা উপজেলার সদর শহর হল কসবা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার তৃতীয় বৃহত্তম শহর হিসেবে পরিচিত কসবা, উপজেলার প্রধান বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক কেন্দ্র। চট্টগ্রাম থেকে ২০২.২ কিমি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর থেকে ৩১.২ কিমি দূরত্বে অবস্থিত এই শহরটির জনসংখ্যা প্রায় ৪০,৪১৬ (পুরুষ ১৯,৭৪৯, নারী ২০,৬৬৭)। ৭৭৫৭টি পরিবার নিয়ে গঠিত এই শহরের লিঙ্গ অনুপাত ৯৬।

ভৌগোলিক অবস্থান:

কসবা শহরের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হল ২৩°৪৪′৫০″ উত্তর ৯১°০৭′৩৩″ পূর্ব। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা ৯ মিটার।

প্রশাসন ও পরিকাঠামো:

১৯৯৯ সালে কসবা পৌরসভা গঠিত হয়, যা ৯টি ওয়ার্ড এবং ৩৪টি মহল্লায় বিভক্ত। ১৬.৮৬ বর্গ কিমি আয়তনের এই পৌরসভা শহরের নাগরিকদের বিভিন্ন সেবা প্রদান করে। শহরের সাক্ষরতার হার ৫৬%। কসবায় বেশ কিছু স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেমন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পোপীনাথপুর গ্রীন হেলথ হাসপাতাল, সেন্ট্রাল হাসপাতাল লিমিটেড, কুটি, বসুন্ধরা ক্লিনিক এবং স্কয়ার হাসপাতাল।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

কসবা সুলতানি আমলের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপবিভাগীয় প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল। ঐতিহাসিক তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে ৩৭টি কসবার সন্ধান পাওয়া গেছে, যার অধিকাংশই বর্তমান জেলা শহরের কাছে অবস্থিত। কসবা শাসন ব্যবস্থায় একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা, কাজী এবং কোতোয়াল ছিলেন। মুঘল আমলে কসবাগুলির গুরুত্ব কিছুটা হ্রাস পায়। বর্তমানে বিভিন্ন জেলায় কাজীর কসবা, নগর কসবা, কসবা আটিয়া, শহর কসবা, কসবা নূরপুর, কসবা সাগরপুর, পয়গ্রাম কসবা, চোয়ারা কসবা, আমরুল কসবা, কিসমত কসবা, কসবা মান্দা, বড় কসবা, লাখেরাজ কসবা ইত্যাদি নামে কসবা পাওয়া যায়।

অর্থনীতি:

কসবার অর্থনীতি প্রধানত কৃষিকাজ, বাণিজ্য ও ছোটখাটো ব্যবসায় নির্ভরশীল।

উপসংহার:

কসবা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর, যার ঐতিহাসিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। এই শহরের উন্নয়ন এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • কসবা হল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা শহর।
  • এটি চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত।
  • কসবার জনসংখ্যা প্রায় ৪০,৪১৬।
  • এটি সুলতানি আমলের একটি প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল।
  • কসবার সাক্ষরতা হার ৫৬%।