যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ পার্টি: একটি বিশদ বিশ্লেষণ
কনজারভেটিভ অ্যান্ড ইউনিয়নিস্ট পার্টি, যা সাধারণত কনজারভেটিভ পার্টি বা টোরিস নামে পরিচিত, যুক্তরাজ্যের দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের একটি। লেবার পার্টির সাথে এর দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ব্রিটিশ রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে এটি বিরোধী দল হিসেবে কাজ করছে।
ঐতিহাসিক পটভূমি:
১৮৩৪ সালে টোরি পার্টি থেকে কনজারভেটিভ পার্টির উত্থান ঘটে। ১৯ শতকে লিবারেল পার্টির সাথে এটি ছিল দেশের দুটি প্রভাবশালী দল। বেঞ্জামিন ডিজরায়েলির নেতৃত্বে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের উচ্চ রাজনীতিতে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। ১৯১২ সালে লিবারেল ইউনিয়নিস্ট পার্টির সাথে মিলিত হয়ে এটি কনজারভেটিভ এবং ইউনিয়নিস্ট পার্টি হিসেবে গঠিত হয়।
বিংশ শতাব্দীতে লেবার পার্টির উত্থানের সাথে কনজারভেটিভ-লেবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা ব্রিটিশ রাজনীতিকে গঠন করে। উইনস্টন চার্চিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন পার্টির নেতৃত্ব দেন। ১৯৭৯ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মার্গারেট থ্যাচার এবং এরপর ১৯৯৭ পর্যন্ত জন মেজর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ডেভিড ক্যামেরন ২০০৫ সালে নেতা নির্বাচিত হয়ে দলের আধুনিকীকরণে প্রচেষ্টা চালান। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দলটি ৫ জন প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছে, শেষ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ঋষি সুনাক।
নীতি ও মতাদর্শ:
কনজারভেটিভ পার্টি সাধারণত মুক্ত বাজারের পক্ষে উদার অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করে। নিয়ন্ত্রণহীনতা, বেসরকারীকরণ এবং বাজারীকরণ ১৯৮০ সাল থেকে এর প্রধান নীতি। ঐতিহাসিকভাবে এটি সুরক্ষাবাদের পক্ষে ছিল। এটি ব্রিটিশ ইউনিয়নবাদী এবং স্কটিশ ও ওয়েলশ স্বাধীনতার বিরোধী। ঐতিহাসিকভাবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ধারাবাহিকতা ও রক্ষণাবেক্ষণকে সমর্থন করে এসেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি এর নীতি সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়েছে। প্রতিরক্ষা নীতিতে স্বাধীন পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি ও ন্যাটো সদস্যতার প্রতিশ্রুতি এর প্রধান বৈশিষ্ট্য।
ভোটার ভিত্তি:
ঐতিহাসিকভাবে বাড়ির মালিক, ব্যবসায়ী, কৃষক, ভূসম্পত্তি উন্নয়নকারী এবং মধ্যবিত্ত ভোটারদের নিয়ে গঠিত কনজারভেটিভ পার্টির ভোটার ভিত্তি, বিশেষ করে ইংল্যান্ডের গ্রামীণ ও শহরতলির এলাকায়। তবে ২০১৬ সালের ইইউ গণভোটের পর থেকে এটি প্রথাগত শ্রমিকদের দুর্গ থেকে শ্রমিক শ্রেণীর ভোটারদের লক্ষ্য করেছে।
সাম্প্রতিক সময়:
২০ শতক জুড়ে ব্রিটিশ রাজনীতিতে রক্ষণশীলদের আধিপত্য, ৬৫টি অবিচ্ছিন্ন বছর শাসন করে, এটিকে পশ্চিমা বিশ্বের অন্যতম সফল রাজনৈতিক দলে পরিণত করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতায় পার্টিটি নেতৃত্ব পরিবর্তনের মুখোমুখি হয়েছে। সর্বশেষ সাধারণ নির্বাচনে ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ ফলাফলের পর ঋষি সুনাক পদত্যাগ করেন, এরপর নেতৃত্বের লড়াইয়ের পর কেমি ব্যাডেনোচ কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা নির্বাচিত হন।
আরও তথ্য পাওয়া গেলে এই নিবন্ধটি আপডেট করা হবে।