কচুয়া থানা নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রবন্ধ
বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলায় অবস্থিত কচুয়া থানা উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রধান প্রতিষ্ঠান। এটি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে দাউদকান্দি থানার অধীনে ছিল এবং মহারাণী ভিক্টোরিয়ার রাজত্বকালে হাজীগঞ্জ থানার অধীনে ছিল। ১৯১৮ সালের ২৫শে জানুয়ারী হাজীগঞ্জ থেকে পৃথক হয়ে কচুয়া থানা স্বতন্ত্রভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
কচুয়া থানার নামকরণ নিয়ে দুটি জনশ্রুতি প্রচলিত। একটি অনুসারে, সেনিটিক ভাষায় উপশহরকে ‘কাচওয়া’ বলা হত, যা কালক্রমে ‘কচুয়া’ হয়েছে। অন্য একটি জনশ্রুতি অনুসারে, ১৯০৫ সালে হাজীগঞ্জ থানার সীমানা নির্ধারণের সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা কচুয়া বাজারের কাছে তালগাছের নিচে কয়েক দিন অবস্থান করেন। জরিপ কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে একজন মৌলভীর প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ কর্মকর্তা ‘কুচ হুয়া’ (কিছু হয়েছে) বলেন, যা থেকে ‘কচুয়া’ নামের উৎপত্তি হয়েছে।
কচুয়া থানার আওতাধীন ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন রয়েছে। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, কচুয়া উপজেলার জনসংখ্যা ছিল ৩,৮২,১৩৯ জন। উপজেলার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, গম, আলু, সরিষা, তিল প্রধান কৃষি ফসল। আম, কাঁঠাল, আনারস, কলা, কুল প্রধান ফল। কুল, কলা, আলু প্রধান রপ্তানি দ্রব্য। কচুয়া উপজেলায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে রঘুনাথপুর বাজারে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা ও ১৪ জন নিরীহ লোক রাজাকারদের হামলায় নিহত হন।
কচুয়া থানা কেবল একটি প্রশাসনিক ইউনিট নয়, এটি কচুয়া উপজেলার ইতিহাস, সংস্কৃতি, এবং অর্থনীতির সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। এটি উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা ও জনসাধারণের সুরক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।