কক্সবাজার সদর উপজেলা: বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা হল কক্সবাজার সদর। এটি জেলা সদরও বলে পরিচিত। ১১৮.৮০ বর্গ কিমি আয়তনের এই উপজেলা ২১°২৪´ থেকে ২১°৩৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫৯´ থেকে ৯২°০৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। উত্তরে চকোরিয়া, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও রামু, পূর্বে রামু, এবং পশ্চিমে মহেশখালী উপজেলা, মহেশখালী চ্যানেল ও বঙ্গোপসাগর এর সীমানা। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, এর জনসংখ্যা ছিল ৩৩৮,৭৬০ জন; যার মধ্যে পুরুষ ১৮০,৯৩৪ এবং মহিলা ১৫৭,৮২৬ জন। মুসলিম ৩০৮১৩২, হিন্দু ২৪২৮২, বৌদ্ধ ৫৭৬৪, খ্রিস্টান ৯৩ এবং অন্যান্য ৪৮৯। বাকখালী নদী উপজেলার প্রধান নদী।
ইতিহাস: ১৮৫৪ সালে কক্সবাজার থানা এবং ১৯৫৯ সালে টাউন কমিটি গঠিত হয়। ১৯৭২ সালে টাউন কমিটিকে পৌরসভায় রূপান্তরিত করা হয় এবং ১৯৮৩ সালে থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। ১৯৮৯ সালে পৌরসভা সি গ্রেড থেকে বি গ্রেডে উন্নীত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময়, পাকবাহিনী উপজেলার পুরাতন রেস্ট হাউসের পেছনে জ্ঞানেন্দ্র লাল চৌধুরীসহ অনেককে হত্যা করেছিল এবং বদর মোকামে দুজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছিল।
ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: উপজেলায় ২৯৬ টি মসজিদ, ২১ টি মন্দির, ১৭ টি প্যাগোডা, ৫ টি গির্জা এবং ৫ টি মাযার রয়েছে। কক্সবাজার সরকারি কলেজ (১৯৬২), কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭৪) উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার হার ৪৪.৬%; পুরুষ ৫৩.৬%, মহিলা ৫০.৯%।
অর্থনীতি: কৃষি, অকৃষি শ্রমিক, ব্যবসা, পরিবহণ, চাকরি, নির্মাণ, ধর্মীয় সেবা, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স এবং অন্যান্য উৎস থেকে উপজেলার মানুষের আয় হয়। প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, পান, সুপারি এবং শাকসবজি। পোশাকশিল্প, মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, লবণ মিল, বরফ কল, এবং অন্যান্য কুটির শিল্পও রয়েছে। প্রধান রপ্তানি পণ্য পান, সুপারি, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, আনারস, কাঠ, হিমায়িত চিংড়ি এবং শুঁটকি মাছ।
যোগাযোগ ও প্রাকৃতিক সম্পদ: উপজেলায় ১৫৫ কিমি পাকারাস্তা, ৫০ কিমি আধাপাকা রাস্তা, ৮৩১ কিমি কাঁচারাস্তা এবং ১৩৯৫ কিমি নৌপথ রয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদ হিসেবে জিরকন, ইলমেনাইট, রুটাইল, কয়নাইট, ম্যাগনাটাইট এবং মোনাজাইট পাওয়া যায়। বিদ্যুৎ ব্যবহারের হার ৫৪.০%। স্যানিটেশন ব্যবস্থার দিক থেকে ৬১.৯% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩১.৫% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৬.৬% পরিবারের কোন ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।