এলাহাবাদ

এলাহাবাদ, বর্তমানে প্রয়াগরাজ নামে পরিচিত, উত্তর প্রদেশের একটি ঐতিহাসিক ও পবিত্র নগরী। গঙ্গা ও যমুনা নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত এই শহরটি হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। পৌরাণিক কথামালা অনুযায়ী, গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতী নদীর ত্রিবেণী সংগম এইখানে অবস্থিত। এই ত্রিবেণী সংগমের কারণে প্রয়াগরাজ হিন্দুদের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। শহরটির নামকরণের পিছনেও রয়েছে ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও পৌরাণিক কাহিনী।

প্রয়াগরাজের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। আদি যুগ থেকেই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল। মহাভারত ও রামায়ণের মতো মহাকাব্যেও এই শহরের উল্লেখ রয়েছে। মোগল আমলে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল। ব্রিটিশ শাসনামলেও এর গুরুত্ব অক্ষুণ্ণ ছিল। ১৯৯৯ সালে ভারত সরকারের মানব সম্পদ বিভাগের অন্তর্গত রাজ্যের প্রথম ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি সংস্থান প্রয়াগরাজে প্রতিষ্ঠিত হয়।

ভৌগোলিকভাবে, প্রয়াগরাজ গঙ্গা ও যমুনা নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত, যা এর আবহাওয়া ও পরিবেশে বিশেষ প্রভাব ফেলে। শহরটির জনসংখ্যা বেশ উল্লেখযোগ্য। এখানে রয়েছে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় স্থাপনা এবং বাজার। প্রয়াগরাজের অর্থনীতি মূলত বাণিজ্য, পর্যটন, এবং কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। কুম্ভ মেলা, যা প্রতি ১২ বছরে অনুষ্ঠিত হয়, প্রয়াগরাজের অর্থনীতিতে একটি বড় ভূমিকা পালন করে।

প্রয়াগরাজে তিনটি প্রধান রেল স্টেশন আছে: এলাহাবাদ জংশন, এলাহাবাদ সিটি এবং চেওঁকি জংশন। এলাহাবাদ জংশন হলো প্রধান রেল স্টেশন। হাওড়া-দিল্লি রুটের ট্রেনগুলি এই স্টেশন ব্যবহার করে।

প্রয়াগরাজ শুধুমাত্র ধর্মীয় তীর্থস্থান নয়, এটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ধন। এই শহরের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব অনস্বীকার্য। অনেকেই এখানে বেড়াতে আসেন এর ঐতিহ্য, ঐশ্বর্য এবং সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

মূল তথ্যাবলী:

  • প্রয়াগরাজ হল গঙ্গা ও যমুনা নদীর ত্রিবেণী সংগমস্থলে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক নগরী।
  • এটি হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র তীর্থস্থান।
  • মহাভারত ও রামায়ণে এর উল্লেখ আছে।
  • ১৯৯৯ সালে এখানে ভারত সরকারের একটি তথ্য প্রযুক্তি সংস্থান প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • কুম্ভ মেলা প্রয়াগরাজের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।