ইসলামি সভ্যতা

আপডেট: ৪ জানুয়ারী ২০২৫, ২:৫৪ পিএম

ইসলামি সভ্যতা: একটি বিস্তৃত আলোচনা

সভ্যতা বলতে বোঝায় সামাজিক শৃঙ্খলা, আইনি শাসন ও জনকল্যাণের মাধ্যমে গড়ে ওঠা সাংস্কৃতিক সৃজনশীলতা। পৃথিবীর বিভিন্ন সভ্যতার মধ্যে ইসলামি সভ্যতা অন্যতম। ইসলাম ধর্মের আবির্ভাবের সাথে সাথেই এই সভ্যতার উৎপত্তি। হযরত মুহাম্মদ (সা.) ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতির জনক। পবিত্র চিন্তা-চেতনা এবং যুক্তির উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে ইসলামি সভ্যতা। জাতিগত বৈষম্য, কুসংস্কার ও গোঁড়ামির কোনো স্থান নেই এ সভ্যতায়। এটি কোনো নির্দিষ্ট জাতি বা শ্রেণির সাথে সম্পর্কিত নয়। বরং জীবন্ত ও গতিশীল, সময়ের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম।

ইসলামি সভ্যতার বিকাশ:

ইসলামি সভ্যতা মসজিদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। প্রতিটি দেশের মসজিদ ইসলামি সভ্যতার প্রতীক। ইসলাম যদি গতিময় না হত এবং অন্যান্য সংস্কৃতিকে বিলীন করার চেষ্টা চালাত তাহলে ইসলামি সভ্যতা আরব ভূখন্ডের গন্ডি পেরোতে পারত না। ইসলামের গতিশীলতা এবং অন্যান্য সংস্কৃতিকে আকৃষ্ট করার ক্ষমতার ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই এটি বিশাল এক সভ্যতায় পরিণত হয়।

ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতির অবদান:

ইসলামি সভ্যতা বিশ্বের উন্নয়নে অপূরণীয় অবদান রেখেছে। প্রথম ভূ-মানচিত্র নির্মাতারা ছিলেন মুসলিম। মুসলিম বিজ্ঞানীরা জ্যোতির্বিজ্ঞান, ক্ষেত্রতত্ত্ব, চিকিৎসা, বীজগণিত, নৌ-চালনা ও ভূগোলে অগ্রগতি সাধন করেছেন। ইবনে ইউনুসের অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমা মন্ডল নিয়ে গবেষণা ইউরোপে গৃহীত হয়েছিল। কম্পাস, পানির গভীরতা মাপার যন্ত্র আবিষ্কারের জন্যও মুসলিম বৈজ্ঞানিকদের অবদান উল্লেখযোগ্য। কুরআন সুন্দর হরফে লেখার প্রয়োজনে উন্নত হয় আরবি ক্যালিগ্রাফি। সত্য-মিথ্যা হাদিস বিশ্লেষণের জন্য উন্নত হয় রিজালশাস্ত্র, ফিকাহ ও উসূলে ফিকহ্। আরবি ক্যালিগ্রাফি, রিজালশাস্ত্র, ফিকাহ, উসূলে ফিকহ্ ইত্যাদি ইসলামি সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক।

ইসলামি সভ্যতার সঙ্কট:

বর্তমানে ইসলামি সভ্যতা সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর কার্যকলাপ মানবসভ্যতার জন্য হুমকি। যুদ্ধ-বিগ্রহ, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ইত্যাদি মানবসভ্যতার জন্য হুমকি।

ইসলামি সভ্যতার ভবিষ্যৎ:

ইসলামি সভ্যতার ভবিষ্যৎ নির্ভর করে এর ধারকদের উপর। ন্যায্যতা, মূল্যবোধ ও নৈতিক শিক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধের সম্প্রসারণ জরুরি। সুশিক্ষা, জ্ঞান ও বিবেকের বিকাশে জোর দিলে ইসলামি সভ্যতা আবারও তার উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে পারে। বহুজাতিক ঐক্যের মাধ্যমে সভ্যতার সঙ্কট মোকাবেলা সম্ভব। এজন্য নিজ নিজ সমস্যা নিজ উদ্যোগেই সমাধান করতে হবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ইসলাম ধর্মের আবির্ভাবের সাথে সাথেই ইসলামি সভ্যতার উৎপত্তি।
  • হযরত মুহাম্মদ (সা.) ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতির জনক।
  • ইসলামি সভ্যতা জাতিগত বৈষম্য, কুসংস্কার ও গোঁড়ামি থেকে মুক্ত।
  • মসজিদ ইসলামি সভ্যতার প্রতীক।
  • ইসলামি সভ্যতা বিশ্বের উন্নয়নে অপূরণীয় অবদান রেখেছে।
  • বর্তমানে ইসলামি সভ্যতা সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
  • ন্যায্যতা, মূল্যবোধ ও নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে ইসলামি সভ্যতার উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে পারে।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - ইসলামি সভ্যতা

ইরান দূতাবাস ‘নতুন ইসলামি সভ্যতা গঠনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করেছে।