আব্দুল বারী

ড. মুহাম্মদ আব্দুল বারী: একজন অসাধারণ শিক্ষাবিদ ও ইসলামি পণ্ডিত

ড. মুহাম্মদ আব্দুল বারী (১ সেপ্টেম্বর ১৯৩০ - ৪ জুন ২০০৩), এম এ বারী নামেও পরিচিত, বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট ইসলামি পণ্ডিত, লেখক ও শিক্ষাবিদ ছিলেন। তিনি শুধুমাত্র একজন শিক্ষাবিদ ছিলেন না, বরং ছিলেন একজন দূরদর্শী নেতা, যিনি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

তিনি ১৯৩০ সালের ১ সেপ্টেম্বর বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানার সৈয়দপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার পৈতৃক নিবাস ছিল দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর থানার আটরাই, খোলাহাটী গ্রামে। তার পিতা মুহাম্মদ আবদুল্লাহিল বাকী ছিলেন একজন প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ এবং অবিভক্ত ভারতে মুসলিম লীগের সহ-সভাপতি। বারী বাল্যশিক্ষা তার পিতার কাছ থেকেই লাভ করেন। তিনি গ্রামের মাদ্রাসা এবং নওগাঁ কো-অপারেটিভ হাই মাদ্রাসা থেকে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন। ১৯৪৬ সালে ঢাকা ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (বর্তমান কবি নজরুল সরকারি কলেজ) থেকে আই.এ পাস করেন এবং ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে বি.এ (সম্মান) এবং ১৯৫০ সালে এম.এ ডিগ্রি অর্জন করেন। উভয় পরীক্ষায় তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন।

পাকিস্তান সরকারের বৃত্তি পেয়ে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে ডি.ফিল ডিগ্রি লাভ করেন। তার গবেষণা বিষয় ছিল ১৯ শতকে বাংলার মুসলিম সংস্কার আন্দোলন। তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়েও গবেষণা করেছেন এবং 'নাফিন্ড ফাউন্ডেশন' ফেলোশিপ লাভ করে পূর্ব লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট-ডক্টোরাল রিসার্চ সম্পন্ন করেন।

১৯৫৪ সালে তিনি পাকিস্তান শিক্ষাসার্ভিসে সরাসরি অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ঢাকা ও রাজশাহী কলেজে অধ্যাপনা করার পর ১৯৫৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডীন, জিন্নাহ হলের প্রভোস্ট ও সিন্ডিকেট সদস্যও ছিলেন।

১৯৭১ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, তিনি ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয়বারের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এবং উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯২ সালে তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ড. আব্দুল বারী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন, যেমন জাতীয় শিক্ষা সংস্কার কমিটি, মাদ্রাসা শিক্ষা সংস্কার কমিটি, ইসলামী বিশ্বকোষ প্রণয়ন সম্পাদনা বোর্ড। তিনি ‘বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস' নামক ইসলামি দাওয়াতী সংগঠনের সভাপতি ছিলেন এবং বহু মাদ্রাসা, মসজিদ ও ইয়াতিমখানার প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখেছেন।

১৯৬৯ সালে তিনি

মূল তথ্যাবলী:

  • ড. মুহাম্মদ আব্দুল বারী ছিলেন একজন বিশিষ্ট ইসলামি পণ্ডিত ও শিক্ষাবিদ।
  • তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন।
  • তিনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন।
  • তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ছিলেন।
  • তিনি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।