আবদুল মালেক

আবদুল মালেক: একজন অসাধারণ রাজনীতিক ও আইনজীবী

আবদুল মালেক, নামটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্মরণীয়। তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট আইনজীবী এবং দক্ষ রাজনীতিক। ১৯২৫ সালের ১ অক্টোবর নোয়াখালী জেলার সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামে তাঁর জন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ (১৯৫১) এবং এল.এল.বি (১৯৫২) ডিগ্রি লাভের পর নোয়াখালীতে আইন ব্যবসা শুরু করেন। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয়, পূর্ব বাংলা মুসলিম ছাত্রলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।

আওয়ামী লীগের সাথে তাঁর দীর্ঘ সম্পর্ক। নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য (১৯৬৪-৭২), এমনকি ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একাংশের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৫৬, ১৯৬২ এবং ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৬৫ সালে প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের ও সম্মিলিত বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। ছয় দফা আন্দোলনে অংশগ্রহণের কারণে তাঁকে নিরাপত্তা আইনে কারাবরণ করতে হয়। ১৯৭০ সালে নোয়াখালী-৪ আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি প্রবাসী মুজিবনগর সরকারের সাহায্য ও পুনর্বাসন কমিটির সদস্য ছিলেন এবং বিশ্বজনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে নেপাল সফর করেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর, আবদুল মালেক সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ১৯৭৫ সালে জাতীয় সংসদের স্পীকার নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে আবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮৭ সালের ১৭ অক্টোবর ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়। আবদুল মালেক একজন অনন্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যিনি আইন, রাজনীতি ও জনসেবার মাধ্যমে দেশের জন্য অবদান রেখে গেছেন।

মূল তথ্যাবলী:

  • আবদুল মালেক: একজন বিশিষ্ট আইনজীবী ও রাজনীতিক
  • ১৯২৫ সালে নোয়াখালীতে জন্ম
  • পূর্ব বাংলা মুসলিম ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য
  • আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা
  • মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
  • স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় সংসদের স্পীকার হিসেবে দায়িত্ব পালন
  • ১৯৮৭ সালে ঢাকায় মৃত্যু