অর্থনৈতিক ঝুঁকি

আপডেট: ৫ জানুয়ারী ২০২৫, ৭:১৬ এএম

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ঝুঁকি: বর্তমান চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাব্য সমাধান

বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বিশ্বব্যাংকের মতে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি, আমদানি নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থিক খাতের ঝুঁকি চারটি প্রধান চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জগুলির ফলে চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কমে ৫.৬% হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক, যখন সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ৭.৫%।

বিশ্বব্যাংক তিনটি প্রধান ঝুঁকির কথাও উল্লেখ করেছে:

1. মুদ্রা বিনিময় হার সংস্কার বিলম্ব: এটি বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি ও আমদানি নিয়ন্ত্রণকে দীর্ঘস্থায়ী করছে।

2. উচ্চ মূল্যস্ফীতি: জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণে দীর্ঘদিন ধরে মূল্যস্ফীতি অব্যাহত রয়েছে, যা নিম্ন আয়ের মানুষদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।

3. আর্থিক খাতের ঝুঁকি: সমন্বিত সংস্কার কর্মসূচি না নেওয়ায় আর্থিক খাতের চলমান ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। খেলাপি ঋণের হার বেড়ে ৯% এ পৌঁছেছে।

বিশ্বব্যাংক ব্যাংক একীভূতকরণের প্রসঙ্গে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছে। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনে এবং সম্পদের মান ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা প্রয়োজন।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্বব্যাংক মুদ্রানীতি কঠোর করার, নিত্যপণ্যের শুল্ক কমানোর, জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ের ও রপ্তানি খাতে ভর্তুকি কমানোর পরামর্শ দিয়েছে।

কর ফাঁকি ও করছাড় সমাধানের জন্য কর আদায় ব্যবস্থা শক্তিশালী করার, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে প্যারা-ট্যারিফ কমিয়ে আনা, করছাড় যৌক্তিক করা ও কর প্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রয়োজন বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর গবেষণা অনুসারে, আগামী দুই বছরে মুদ্রাস্ফীতি, অর্থনৈতিক মন্দা এবং দারিদ্র্য ও বৈষম্য তিনটি অর্থনৈতিক ঝুঁকি থাকবে। এছাড়া বেকারত্ব, জ্বালানি ঘাটতি এবং স্বাস্থ্যখাতের দুরবস্থা সামাজিক ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত। সিপিডি দুর্নীতি, আমলাতন্ত্রের অদক্ষতা, বৈদেশিক মুদ্রার অস্থিতিশীলতা, মুদ্রাস্ফীতি, আর্থিক সীমাবদ্ধতা, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, নীতির অস্থিতিশীলতা, দুর্বল শ্রমশক্তি, উচ্চ করহার প্রভৃতি ১৭ টি সমস্যার কথা উল্লেখ করেছে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডাব্লিউইএফ)-এর প্রতিবেদনে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ঋণসংকট, উচ্চ পণ্যমূল্যের ধাক্কা, মানবসৃষ্ট পরিবেশগত ক্ষতি ও সম্পদের জন্য ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতাকে বাংলাদেশের জন্য প্রধান ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এই প্রতিবেদন লেখা হয়েছে। আরও তথ্য পাওয়া গেলে আমরা প্রতিবেদনটি আপডেট করব।

মূল তথ্যাবলী:

  • বিশ্বব্যাংকের মতে বাংলাদেশের চারটি প্রধান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ হলো উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি, আমদানি নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থিক খাতের ঝুঁকি।
  • বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে ৫.৬% হতে পারে।
  • সিপিডি-এর মতে আগামী দুই বছরের জন্য বাংলাদেশের প্রধান অর্থনৈতিক ঝুঁকি হলো মুদ্রাস্ফীতি, অর্থনৈতিক মন্দা এবং দারিদ্র্য ও বৈষম্য।
  • ডাব্লিউইএফ উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ঋণসংকট, উচ্চ পণ্যমূল্য, পরিবেশগত ক্ষতি ও ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতাকে বাংলাদেশের জন্য প্রধান ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।