হুয়াওয়ে: চীনের বহুজাতিক প্রযুক্তি জায়ান্ট
চীনের একটি বহুজাতিক প্রযুক্তি কর্পোরেশন হল হুয়াওয়ে। ১৯৮৭ সালে চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) একজন প্রাক্তন কর্মকর্তা রেন জেংফেই কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত, হুয়াওয়ে টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম, স্মার্ট ডিভাইস এবং সৌরশক্তি পণ্য ডিজাইন, উন্নয়ন, উৎপাদন এবং বিক্রয় করে। শেনঝেন, গুয়াংডং প্রদেশে এর সদর দপ্তর অবস্থিত।
প্রাথমিকভাবে টেলিফোন সুইচ নির্মাণের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, হুয়াওয়ে ধীরে ধীরে বিশ্বের ১৭০ টিরও বেশি দেশে কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে। ২০১২ সালে এটি বিশ্বের বৃহত্তম টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক হিসেবে এরিকসনকে ছাড়িয়ে যায়, এবং ২০১৮ এবং ২০২০ সালে যথাক্রমে অ্যাপল এবং স্যামসাংকে ছাড়িয়ে বিশ্বের বৃহত্তম স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক হিসেবে আবির্ভূত হয়।
আন্তর্জাতিক সাফল্য সত্ত্বেও, রাষ্ট্রীয় সমর্থন, পিএলএ এবং চীনের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় (এমএসএস)-এর সাথে সম্পর্ক, এবং হুয়াওয়ের অবকাঠামোগত সরঞ্জামগুলি চীনা সরকারের নজরদারির জন্য ব্যবহারের আশঙ্কায় বিভিন্ন দেশে হুয়াওয়ে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ হুয়াওয়ের সরঞ্জাম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। হুয়াওয়ে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বর্তমানে হুয়াওয়ে তিনটি প্রধান ব্যবসায়িক অংশে কাজ করে: ক্যারিয়ার নেটওয়ার্ক, এন্টারপ্রাইজ এবং কনজিউমার। কোম্পানিটির আরও রয়েছে ক্লাউড, এআই, ইলেকট্রিক ভেহিকেল, এবং সৌরশক্তি ব্যবসা।
হুয়াওয়ের স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ওয়াচ, ল্যাপটপ এবং অন্যান্য গ্রাহক ইলেকট্রনিক্স পণ্য বাজারে জনপ্রিয়। কোম্পানিটি বিশ্বব্যাপী টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
হুয়াওয়ে নিজেকে কর্মচারী-মালিকানাধীন কোম্পানি বলে দাবি করে, তবে তার মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। চীন সরকারের সাথে কোম্পানির ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে অনেক দেশ এটিকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা, মেং ওয়ানঝৌ-এর গ্রেফতার, এবং হুয়াওয়ের বিক্রয় ও লাভে উল্লেখযোগ্য হ্রাস হুয়াওয়ের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। তবে হুয়াওয়ে ২০২৩ সালে পুনরায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
উল্লেখ্য, এই লেখাটি প্রদত্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে লিখিত হয়েছে এবং এই বিষয়ে আরও জানার জন্য বিভিন্ন উৎস অনুসন্ধান করা জরুরি।