হাজারীবাগের শিকারিটোলা: একটি বহুমুখী চিত্র
ঢাকা মহানগরীর হাজারীবাগ থানার অন্তর্গত শিকারিটোলা এলাকাটি বেশ কিছু ঘটনার জন্য পরিচিত। এই এলাকাটি ট্যানারি শিল্পের সাথে জড়িত থাকার পাশাপাশি আবাসিক এলাকা হিসেবেও পরিচিত। তবে, সম্প্রতি এখানে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা শিকারিটোলাকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে।
২০২৪ সালের ২৯শে ডিসেম্বর, হাজারীবাগ থানা পুলিশ শিকারিটোলা ৯১/২ নম্বর বাড়ির তিনতলা একটি বাসা থেকে তৌফিক হোসেন (২৮) নামে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, তৌফিক আত্মহত্যা করেছেন। তৌফিক হাজারীবাগের একটি জুতার কারখানায় কাজ করতেন এবং তার পরিবার গজমহল এলাকায় বসবাস করত।
অন্যদিকে, হাজারীবাগের গজমহল ও শিকারিটোলা মৌজার জমি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) অধিগ্রহণের পরিকল্পনা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে প্রতিবাদ সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে, স্থানীয়রা 'প্রাণ দিব তো, জমি দিব না' –এমন অঙ্গীকারের মাধ্যমে জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। তারা রাজউকের এ উদ্যোগকে প্রধানমন্ত্রীর গৃহহীনদের ঘর দেওয়ার প্রচেষ্টার বিপরীত বলে উল্লেখ করেছে এবং কুচক্রীমহলের সাথে রাজউকের সম্পৃক্ততার অভিযোগ করেছে। স্থানীয়রা ১৩ সদস্যের বসতভিটা মালিক ঐক্য পরিষদ গঠন করে পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এই ঘটনার পর, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন গজমহল-শিকারিটোলা ও বিরবন্ধ কাছড়া আবাসিক এলাকা অধিগ্রহণের তথ্য চেয়ে রাজউকের কাছে চিঠি পাঠায়। স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে যে ট্যানারি মালিকরা নিজেদের স্বার্থে রাজউকের সাথে মিলে এ উচ্ছেদের পরিকল্পনা করেছে। 'ঢাকা আরবান জি-জেনারেশন' নামে একটি প্রকল্পের আওতায় এই অধিগ্রহণ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শিকারিটোলা একটি গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকা হলেও এর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। জমি অধিগ্রহণ এবং অন্যান্য ঘটনাবলী এই এলাকার জনজীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে।