হরিয়ানা: উত্তর ভারতের একটি ঐতিহাসিক ও সমৃদ্ধ রাজ্য। প্রাচীন কাল থেকেই হরিয়ানার ভূমি সভ্যতার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সিন্ধু সভ্যতা ও বৈদিক সভ্যতার অংশ হিসেবে হরিয়ানা অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে। মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ, এবং পানিপথের তিনটি ঐতিহাসিক যুদ্ধ এই অঞ্চলেই সংঘটিত হয়েছিল।
ব্রিটিশ শাসনের সময় হরিয়ানা পাঞ্জাব প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৬৬ সালে ভাষার ভিত্তিতে এটি পৃথক রাজ্য হিসেবে গঠিত হয়। বর্তমানে হরিয়ানা কৃষি ও দুগ্ধ উৎপাদনে ভারতের অন্যতম অগ্রণী রাজ্য। সমতল উর্বর জমি ও উন্নত সেচ ব্যবস্থার কারণে কৃষিকাজ এই রাজ্যের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। ১৯৬০-এর দশকে ভারতের সবুজ বিপ্লবে হরিয়ানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
অর্থনীতির দিক থেকে হরিয়ানা ভারতের অন্যতম সমৃদ্ধ রাজ্য। গুরুগাঁও তথ্য প্রযুক্তি ও অটোমোবাইল শিল্পের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত। মারুতি উদ্যোগ, হিরো হোন্ডার মতো বৃহৎ সংস্থা গুরগাঁওতে অবস্থিত। পানিপথ, ফরিদাবাদ, যমুনানগর প্রভৃতি শহরগুলোতে শিল্প কেন্দ্রগুলি অবস্থিত।
জনসংখ্যার দিক থেকে হরিয়ানার প্রধান জাতিগোষ্ঠী জাট। জাট সম্প্রদায় রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভারতীয় জনতা পার্টি, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, ইত্যাদি দল রাজ্যের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ। হিন্দু, শিখ ও মুসলমানরা হরিয়ানায় বসবাস করেন। হরিয়ানার সংস্কৃতি বৈচিত্র্যপূর্ণ, ঐতিহ্যবাহী লোকসংগীত, নৃত্য, লোকনাট্য এবং বিভিন্ন শিল্পকলা এই রাজ্যের ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত।