হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল: চাহিদার তুলনায় সীমিত সুযোগ-সুবিধা
২১ লাখ জনসংখ্যার হবিগঞ্জ জেলার চিকিৎসা সেবায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হিসেবে উন্নীত হওয়ার পরও এটি রোগীদের চাহিদা পূরণ করতে করতে পারছে না। ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর দারুণ ঘাটতি রয়েছে। ঔষধের অভাব, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা না থাকা ইত্যাদি সমস্যাও বিরাজমান।
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০০ শয্যার এই হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার ঘোষণা দেন। এর ফলে একটি আধুনিক ৮ তলা ভবন নির্মিত হলেও, জনবল সংকটের কারণে সেটির সুফল রোগীরা পায়নি। বর্তমানেও পুরোনো ৫০ শয্যার জনবল কাঠামোর সাথেই হাসপাতালটি চলছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ২৫০ শয্যার হাসপাতালের জন্য নূন্যতম ৫৬ জন চিকিৎসক প্রয়োজন, কিন্তু হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে মাত্র ৩৮টি পদ রয়েছে, যার অধিকাংশই শূন্য। কর্মরত ডাক্তারদের অনেকই প্রেষণে অন্যত্র কর্মরত আছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মাত্র ৮ জন ডাক্তার প্রায় ২১ লাখ মানুষের চিকিৎসা দিচ্ছেন, যার ফলে প্রতিজন ডাক্তারের উপর ২ লাখ ৩১ হাজার ২৫০ জন রোগীর চাপ পড়ে। কাগজে-কলমে ২১ জন ডাক্তার থাকলেও বাস্তবে মাত্র ৬ জন ডাক্তার রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। অন্যান্য বিভাগের (যেমন সার্জারি, গাইনি) ডাক্তারের ও তীব্র ঘাটতি রয়েছে। হাসপাতালের কর্মকর্তারা একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এই সমস্যার সমাধানের জন্য চিঠি পাঠিয়েছেন। এই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা (ইএমও) ও তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার এই সমস্যাগুলোর বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন।
এই পরিস্থিতি হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালকে রোগীদের জন্য একটি সীমিত সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছে। যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে জনবল সংকট দূর করে, এবং অন্যান্য সমস্যা সমাধান করে এই হাসপাতালের সেবা মান উন্নত করা জরুরি।