সৌরভ

সৌরভ: হুমায়ূন আহমেদের অমর উপন্যাস

হুমায়ূন আহমেদের সৃজনশীলতার এক অনন্য দিক উন্মোচিত করেছে ‘সৌরভ’ উপন্যাসটি। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত এই উপন্যাস ১৯৮৪ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় এবং ২০০৩ সালে অন্যপ্রকাশ থেকে পুনঃপ্রকাশিত হয়। এই উপন্যাসে ঢাকার অবরুদ্ধ পরিবেশের মধ্যে দিয়ে মানুষের জীবন, আশা, ভয় এবং স্বপ্নের চিত্রায়ন করা হয়েছে।

গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র শফিক, একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি যিনি ক্র্যাচ ব্যবহার করেন। তিনি ঢাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করেন এবং তার কাজের জন্য কাদের নামে একজন ব্যক্তিকে নির্ভর করেন। জলিল সাহেব নামে একজন ভাড়াটিয়া পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে নিখোঁজ হলে শফিকের জীবনে নেমে আসে নতুন কষ্ট ও উদ্বেগ। তিনি জলিল সাহেবের খোঁজে শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করেন।

ঢাকার অবস্থা দিন দিন বিরূপ হতে থাকলে মানুষ গ্রামের দিকে পাড়ি জমানো শুরু করে। শফিকের দুলাভাই তার স্ত্রী ও মেয়ে শীলাকে গ্রামে পাঠাতে চান, কিন্তু শফিকের বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার কথা বলে তা প্রতিহত করেন। এক পর্যায়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কাদেরকেও তুলে নিয়ে যায় এবং নির্যাতনের পরে ছেড়ে দেয়। জলিল সাহেব ফিরে আসলেও তার মৃত্যু হয়।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একজন মেজর শফিকের বন্ধু রফিকের বান্ধবী লুনাকে জোর করে বিয়ে করতে চাইলে শফিকের পরিবার গ্রামে চলে যায়। অবশেষে ঢাকায় মুক্তিবাহিনীর আক্রমণ শুরু হয় এবং স্বাধীনতার আশা সবার মনে জাগ্রত হয়। ‘সৌরভ’ উপন্যাসে হুমায়ূন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের মানবিক দিকটি অসাধারণভাবে তুলে ধরেছেন।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৮৪ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় হুমায়ূন আহমেদের ‘সৌরভ’ উপন্যাস।
  • মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত এই উপন্যাস ঢাকার অবরুদ্ধ পরিবেশের চিত্র তুলে ধরে।
  • শফিক নামক এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র।
  • পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্যাতন ও অত্যাচারের বর্ণনা উপন্যাসে স্পষ্ট।
  • স্বাধীনতার আশা ও স্বপ্ন উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু।