সুধীর

আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৮ পিএম

সুধীর চক্রবর্তী (১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৩৪ - ১৫ ডিসেম্বর ২০২০) ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাঙালি অধ্যাপক, লেখক, গবেষক এবং লোকসংস্কৃতি বিশেষজ্ঞ। বাংলার লোকসংস্কৃতির গভীর অনুসন্ধানে তাঁর অবদান অপরিসীম। তিনি বাংলার লোকগান, লোকভাষা, লোকবিশ্বাস ও লোকজীবনকে বিশ্বদুয়ারে তুলে ধরেছেন। ঔপনিবেশিক গদ্যের ধাঁচকে ত্যাগ করে তিনি নিজস্ব লাবণ্যময় ও রসালো গদ্যশৈলী গড়ে তুলেছেন। প্রবন্ধ রচনায় তাঁর অসাধারণ দক্ষতা ছিল।

সুধীর চক্রবর্তীর জন্ম হাওড়া জেলার শিবপুরে। জাপানি বোমাবর্ষণের ভয়ে তাঁর পরিবার নদিয়ার দিগনগরে ও পরে কৃষ্ণনগরে বসতি স্থাপন করে। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন এবং লোকধর্ম, লালন ফকির, বাংলা কাব্যগীতি, সংস্কৃতি-নৃতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত, লালনপন্থা, কর্তাভজা, বাউল-ফকির, সাহেবধনী, বলরামী প্রভৃতি বিষয়ে স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ ছিলেন।

সুধীর চক্রবর্তী কৃষ্ণনগর গভর্মেন্ট কলেজে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেন। অবসর গ্রহণের পরেও তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা চালিয়ে যান। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং রবীন্দ্রনাথ টেগোর সেন্টার ফর হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ-এর সাথেও তিনি যুক্ত ছিলেন। তিনি ষাটের বেশি বই রচনা করেন। তাঁর 'বাউল ফকির কথা' বইটির জন্য ২০০২ সালে আনন্দ পুরস্কার এবং ২০০৪ সালে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে লালন ফকির, বাউল সংস্কৃতি থেকে গ্রামবাংলার মৃৎশিল্প ও চিত্রকলা, সবই তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল। তিনি 'ধ্রুবপদ' নামক সংস্কৃতি ও মননের একটি পত্রিকাও সম্পাদনা করেন। বাংলার লোকসংস্কৃতির উপর তাঁর অবদান অতুলনীয়। কর্তাভজা, বলাহাড়ি, সাহেবধনী প্রভৃতি উপধর্ম সম্প্রদায়ের গান ও বিশ্বাস নিয়ে তিনি বেশ কিছু গ্রন্থ রচনা করেন। 'ব্রাত্য লোকায়ত লালন' বইটি লালন ফকির সম্পর্কে গবেষণার এক মাইলফলক বলে গণ্য হয়।

সুধীর চক্রবর্তী বাংলার লোকসংস্কৃতির প্রকৃত কণ্ঠস্বর। তাঁর লেখাগুলি বাংলার লোকজীবন, লোকশিল্প এবং লোকবিশ্বাসের সার্বিক ধারণা তৈরিতে সাহায্য করে। তাঁর অবদান স্মরণীয় থাকবে সর্বদা।

মূল তথ্যাবলী:

  • সুধীর চক্রবর্তী একজন বিশিষ্ট বাঙালি লোকসংস্কৃতি গবেষক ছিলেন।
  • তিনি ষাটেরও বেশি বই রচনা করেছেন।
  • ‘বাউল ফকির কথা’ বইয়ের জন্য তিনি আনন্দ পুরস্কার ও সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছেন।
  • তিনি ‘ধ্রুবপদ’ নামক সংস্কৃতি পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন।
  • তার গবেষণা বাংলার লোকসংস্কৃতির অধ্যয়নে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - সুধীর

২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

সুধীর নামে এক ব্যক্তি একই অভিযোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন।