সাহিত্যে চুরি নিয়ে আলোচনা করা একটি জটিল বিষয়, কারণ এটি সৃজনশীলতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। লেখা অনুসারে, থিয়েটার ও সাহিত্যে ‘চুরি’ একটি পুনঃবিনির্মাণ প্রক্রিয়া, যেখানে পূর্ববর্তী কর্মের উপাদান নিয়ে নতুন কিছু সৃজন করা হয়। মুনীর চৌধুরী এই ধারণাকে সমর্থন করেছিলেন এবং তার নাটকগুলিতে এর প্রয়োগ দেখা যায়। টি.এস. এলিয়টের মতে, অপরিণত কবি অনুকরণ করেন, পরিণত কবিরা চুরি করেন, এবং ভালো কবি চুরিকে নতুন কিছুতে রূপান্তরিত করেন। পাবলো পিকাসো এই ধারণাকে শিল্পের প্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা করেছেন। ‘আন্তঃপাঠ্য’ বা ‘ইন্টারটেক্সচুয়ালিটি’ এই ধারণার মাধ্যমে একটি পাঠ্য অন্য পাঠ্যের সঙ্গে জড়িত হয়, নানা উদ্ধৃতি, ইঙ্গিত, চুরি, প্যাস্টিক বা প্যারোডি নামের ছলচাতুরীর মাধ্যমে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রাজা’ নাটকে শেক্সপিয়ারের ‘হ্যামলেট’এর প্রভাব স্পষ্ট। মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটক আরউইন শ’র ‘বেরি দ্য ডেড’ নাটকের সঙ্গে সাদৃশ্য ধারণ করে, এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি রাজনৈতিক প্রতিফলন হিসেবে কাজ করে। এই নাটকটি ১৯৫৩ সালে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে লেখা হয়েছিল, যেখানে অনেক প্রখ্যাত ব্যক্তিবর্গ বন্দি ছিলেন। ‘কবর’ নাটকের মাধ্যমে স্যার মুনীর চৌধুরী সমকালীন রাষ্ট্রীয় প্রহসন উন্মোচন করার চেষ্টা করেছিলেন। লেখার মূল বিষয় হচ্ছে সাহিত্যে চুরির ধারণা এবং এটি কীভাবে নতুন সৃজনের একটি মাধ্যম হতে পারে।
সাহিত্যে চুরি
মূল তথ্যাবলী:
- সাহিত্যে চুরি নতুন সৃজনের এক মাধ্যম
- মুনীর চৌধুরীর নাটকে ‘চুরি’র প্রয়োগ
- আন্তঃপাঠ্যতার ধারণা ও এর প্রভাব
- রবীন্দ্রনাথ ও শেক্সপিয়ারের কাজের মিল
- ‘কবর’ নাটক ও বাংলাদেশের ইতিহাস