সামারা: রাশিয়ার একটি ঐতিহাসিক ও শিল্প নগরী
সামারা (রুশ: Сама́ра), পূর্বে ১৯৩৫ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত কুইবিশেভ (Куйбышев) নামে পরিচিত, রাশিয়ার পশ্চিমে অবস্থিত সামারা ওবলাস্তের (প্রশাসনিক অঞ্চল) দক্ষিণ-মধ্যভাগে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ নগরী ও আঞ্চলিক প্রশাসনিক কেন্দ্র। ১৫৮৬ সালে ভোলগা বাণিজ্যপথের নিরাপত্তার জন্য একটি দুর্গশহর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত, সামারা শীঘ্রই একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত হয় এবং আঞ্চলিক প্রশাসনিক কেন্দ্রের মর্যাদা লাভ করে।
১৯৩৫ সালে প্রভাবশালী বলশেভিক নেতা ভালেরিয়ান ভ্লাদিমিরোভিচ কুইবিশেভের নামানুসারে শহরটির নাম পরিবর্তন করা হয় কুইবিশেভ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দূরে অবস্থানের কারণে শহরটি অক্ষত থাকে এবং মস্কো থেকে সরকারের অনেক কার্যালয় স্থানান্তরিত হয়, যা শহরের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যুদ্ধোত্তর যুগে ভোলগা-উরাল অঞ্চলে তেলের আবিষ্কার শহরের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত শাসনের পতনের পর শহরের ঐতিহাসিক নাম সামারা ফিরিয়ে আনা হয়।
ভোলগা ও সামারা নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত সামারা বর্তমানে রাশিয়ার একটি বৃহৎ শিল্পকেন্দ্র। তেল পরিশোধন ও তৈল রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন (বিশেষ করে নোভোকুইবিশেভস্ক উপশহরে), প্রকৌশল, নির্মাণসামগ্রী ও ভোক্তা পণ্য উৎপাদন এখানকার প্রধান অর্থনৈতিক কার্যকলাপ। শহরটি অনেক তেল পরিবহন নালীর কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত। ১৯৫৭ সালে নির্মিত জিগুলিভস্ক জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র সামারার বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করে।
প্রায় ১২ লক্ষ লোকের বসবাস সামারায়। জনসংখ্যার দিক থেকে এটি রাশিয়ার ষষ্ঠ বৃহত্তম শহর। শহরে মহাদেশীয় জলবায়ু বিদ্যমান, গ্রীষ্মের তাপমাত্রা উচ্চ এবং শীতের তাপমাত্রা হিমশীতল। ভোলগা নদীর তীরবর্তী সৈকত পর্যটকদের আকর্ষণ করে। সামারার প্রধান বিমানবন্দর হল কুরুমোচ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।