২০২৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সচিবালয়ে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় সারাদেশে তীব্র উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত এই স্থাপনায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকার পরও এমন ঘটনা ঘটে যাওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আগুনের ঘটনাটি দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত নাশকতা, তা নিয়েও নানা তর্ক-বিতর্ক চলছে।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনের ৬, ৭, ৮ ও ৯ তলায় আগুন লেগেছিলো। দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। এই আগুনে অর্থ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগুনে একজন ফায়ার ফাইটার নিহত হয়েছেন।
আগুনের ঘটনার পর সরকার একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির তিন দিনের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা এটিকে ষড়যন্ত্র হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন।
সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দায়িত্বে থাকা প্রধান সংস্থা হলো পুলিশ। তাদের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়তা করে। গণপূর্ত অধিদপ্তর ভবনগুলোর দেখভাল করে। সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আগুনের ঘটনার পর। কিছু সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নানা দুর্বলতা রয়েছে, যেমন – অচল সিসি ক্যামেরা, পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার অভাব ইত্যাদি।
এই ঘটনার পর সচিবালয়ের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আগুনের কারণ ও দায়ীদের শনাক্ত করার জন্য তদন্ত অব্যাহত আছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সচিবালয়ে নানা ধরনের বিক্ষোভ ও কর্মসূচী পালিত হয়েছে, যার ফলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আবারও চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।