২০২৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও গণআন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক সংকট দেখা দেয়। ৫ই আগস্ট, ২০২৪ তারিখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অকস্মাৎ দেশত্যাগ করলে এই সংকটের সূত্রপাত ঘটে। বাংলাদেশের সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ কিংবা পলায়নের পর নতুন সরকার গঠনের কোনো স্পষ্ট বিধান না থাকায় একটি রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়।
ভারতে আশ্রয় গ্রহণের পর, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ দাবি করেন যে, তার মা পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেননি এবং তাই তিনি সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই অবস্থান করছেন। তবে, এ ব্যাপারে কোন স্পষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে 'ডক্ট্রিন অব নেসেসিটি'র আশ্রয় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে সম্মতি দেন।
এই অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে। এই সরকার গঠনকে আওয়ামী লীগ অসাংবিধানিক ও অবৈধ বলে অভিহিত করে। অন্যদিকে, ফরহাদ মজহারসহ অনেক বুদ্ধিজীবী এই সংকট সমাধানের জন্য একটি গণপরিষদ নির্বাচনের আহ্বান জানান। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালও এই সাংবিধানিক শূন্যতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে আইনী জটিলতা সৃষ্টির সম্ভাবনার কথা বলেন। এছাড়াও, অন্তর্বর্তী সরকারের গঠনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহলে প্রতিবাদ ও বিতর্কের উদ্ভব হয়।
এই সাংবিধানিক সংকটের সৃষ্টির পেছনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের ভূমিকা নিয়ে ও ব্যাপক চর্চা চলে। বিএনপি সহ বিভিন্ন দল এই সংকটের সুযোগ নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করার অভিযোগ ও করে। তবে, সরকার এই সকল অভিযোগ স্বীকার করে না। অন্তর্বর্তী সরকার এই সংকট দূর করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের পরিকল্পনা ও করে। শেষ পর্যন্ত, এই সংকট কীভাবে সমাধান হয়েছে তা নিয়ে বিতর্ক এখনো চলছে।
২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের ফলে সংবিধানিক সংকটের সূত্রপাত।
সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ বা পলায়নের পর নতুন সরকার গঠনের কোনো বিধান নেই।
মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন।
আওয়ামী লীগ অন্তর্বর্তী সরকারকে অসাংবিধানিক বলে দাবি করে।
গণপরিষদ নির্বাচনের আহ্বান ও নতুন সংবিধান প্রণয়নের প্রস্তাব।
সাংবিধানিক শূন্যতা ও ভবিষ্যৎ আইনী জটিলতার আশঙ্কা।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা।