সংগ্রাম

সংগ্রাম: একটি জাতির অভিযাত্রা

সংগ্রাম, শব্দটির অর্থই বহুমুখী। এটি কেবলমাত্র যুদ্ধ কিংবা লড়াই নয়; বরং কোনো লক্ষ্য অর্জনের জন্য একাগ্র প্রচেষ্টা, এক অবিচল অঙ্গীকার। একটি গোষ্ঠী বা ব্যক্তির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন, শান্তিপূর্ণ কিংবা সশস্ত্র, যেখানে সকল প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে, এক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করা হয়, তাকেই সংগ্রাম বলে। বাংলাদেশের ইতিহাস সংগ্রামে ভরা, প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস থেকে শুরু করে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত।

  • *প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস (১৬ আগস্ট, ১৯৪৬):** মুসলিম লীগ কর্তৃক আহ্বান করা হরতাল, ব্রিটিশ শাসন ও হিন্দু আধিপত্য থেকে মুক্তির লক্ষ্যে। কেবিনেট মিশন পরিকল্পনার প্রত্যাখ্যানের পরিপ্রেক্ষিতে, মুসলিম লীগ নেতা মোহম্মদ আলী জিন্নাহ প্রত্যক্ষ সংগ্রামের ডাক দেন। কলকাতা, বিহার ও নোয়াখালীতে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ প্রাণ হারায়। এই দাঙ্গা বাংলা বিভাগের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
  • *ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান:** পূর্ব পাকিস্তানে আইয়ুব খানের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থান। ১৯৬৯ সালের ৫ জানুয়ারি গঠিত হয় সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। তাদের এগারো দফা দাবি ছিল জনগণের অধিকার ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র করে ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা পূর্ব পাকিস্তানে। আসাদ, মতিয়ুর রহমানসহ বহু ছাত্র শহীদ হন। সংগ্রাম পরিষদের আন্দোলনের ফলে আইয়ুব খানের পতন ঘটে এবং গণতন্ত্রের পথ প্রশস্ত হয়। ঢাকা, কলকাতা, বিহার, নোয়াখালী এই সংগ্রামের স্থান।
  • *প্রভাব:** এই দুটি সংগ্রামের ফলাফল ছিল গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী। প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস বাংলা বিভাগের পথ সুগম করে, আর ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পথ প্রশস্ত করে। উভয় সংগ্রামেই জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই ছিল সফলতার মূল চাবিকাঠি।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৪৬ সালের প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবসে কলকাতা দাঙ্গা ও বাংলা বিভাগের পথ প্রশস্ত হয়।
  • ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের এগারো দফা দাবি আইয়ুব খানের পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • দুটি সংগ্রামই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

গণমাধ্যমে - সংগ্রাম

অর্জুন কাপুরের ক্যারিয়ারের সংগ্রামের কথা তিনি নিজেই জানিয়েছেন।