শুরায়ে নেজাম: তাবলীগ জামাতের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও ইজতেমা সংক্রান্ত বিতর্ক
তাবলীগ জামাত, একটি বহুল পরিচিত ইসলামী ধর্মীয় সংগঠন, দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই দ্বন্দ্বের একটি প্রধান প্রকাশ ঘটেছে গাজীপুরের টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমা কেন্দ্র করে। 'শুরায়ে নেজাম' শব্দটি এই প্রেক্ষাপটে তাবলীগ জামাতের ভিন্ন দুটি পক্ষকে নির্দেশ করে, যাদের মধ্যে উত্তেজনা ও বিরোধ বিরাজমান।
একপক্ষ হল মাওলানা জুবায়ের আহমেদের অনুসারীরা, যাদের 'জুবায়েরপন্থী' বা 'শুরায়ে নেজাম' (জুবায়েরপন্থী) বলা হয়। অন্যপক্ষ হল ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা, যাদের 'সাদপন্থী' বলা হয়। উভয় পক্ষই তাবলীগ জামাতের সাথী, তবে তাদের মধ্যে ধর্মীয় আকিদা, ইজতেমা পরিচালনা ও নেতৃত্ব নিয়ে গভীর মতবিরোধ রয়েছে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে, বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনকে কেন্দ্র করে এই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে। সাদপন্থীরা ২০ ডিসেম্বর একটি 'জোড় ইজতেমা' করার পরিকল্পনা করে। কিন্তু জুবায়েরপন্থীরা এর বিরোধিতা করে, যার ফলে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে উত্তেজনা, সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার জেরে উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করে, এবং বেশ কয়েকজন আহত ও নিহত হন। সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় উভয় পক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা করে সমঝোতার চেষ্টা করে।
উল্লেখ্য, 'শুরায়ে নেজাম' শব্দটির নিজস্ব কোনও সুনির্দিষ্ট সংগঠন নেই। এটি তাবলীগ জামাতের জুবায়ের আহমদ অনুসারীদের একটি অস্থায়ী পরিচায়ক নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। আমরা দেখেছি যে 'শুরায়ে নেজাম' নামটি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জুবায়েরপন্থিদের নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হয়েছে।
এই ঘটনাটি তাবলীগ জামাতের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের গুরুত্ব ও তা সমাজে কিভাবে প্রভাব ফেলে সে বিষয়টি স্পষ্ট করে।
এই ধরনের ঘটনা আগামীতে আরও গুরুতর রূপ ধারণ করতে পারে। সরকার এবং সমাজের সকল পক্ষের ই এই বিষয়টি বিবেচনা করার আহ্বান রইল।