শীত: বাংলাদেশের একটি প্রিয় ঋতু
বাংলাদেশে ছয়টি ঋতু রয়েছে, এবং শীতকাল হল সেই ছয়টি ঋতুর মধ্যে একটি বিশেষ ঋতু। এটি বছরের ঠান্ডা অংশ, গ্রীষ্মের বিপরীত। সাধারণত নভেম্বর মাসের শেষের দিকে শুরু হয়ে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। শীতকাল কুয়াশা ও কুয়াশার ঋতু, যখন সকালে ঘাসের উপর শিশিরের বিন্দু মুক্তোর মতো ঝিকিমিকি করে। এই ঋতুতে প্রকৃতি জরাজীর্ণ মনে হলেও, গাছের পাতা ঝরে পড়ে, কিন্তু আকাশ মেঘহীন এবং নীল থাকে।
শীতকাল কৃষকদের জন্য আনন্দদায়ক সময়, কারণ এই ঋতুতে নানা ধরনের ফসল ফলে। ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলু, বেগুন, টমেটো, মাছ এবং খেজুরের রস পাওয়া যায়। মানুষ ‘পায়েস’ এবং নানা ধরনের মিষ্টান্ন তৈরি করে, এবং গ্রামে যাত্রা, জারিগান, কবিগানের আয়োজন হয়। শীতকাল বহিরঙ্গন খেলাধুলারও সময়। কিন্তু শীতের কঠোরতা দরিদ্রদের জন্য কষ্টের কারণও হতে পারে, যাদের কাছে গরম কাপড়ের অভাব থাকে।
শীতের আবহাওয়া স্বাস্থ্যকর, কিন্তু ঠান্ডা লাগা, হাইপোথার্মিয়া, ফ্রস্টবাইট, এবং ট্রেঞ্চ ফুট এর মতো সমস্যাও হতে পারে। শীতকালে ইনফ্লুয়েঞ্জা ও অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পায়। জ্যোতির্বিদ্যা অনুসারে, উত্তর গোলার্ধে শীতকাল ডিসেম্বরের অয়নকালের সাথে শুরু হয়। বিভিন্ন সংস্কৃতি বিভিন্ন তারিখে শীতের শুরু হিসেবে উদযাপন করে। কিছু দেশে ১১ নভেম্বর সেন্ট মার্টিন ডে হিসেবে শীতের প্রথম ক্যালেন্ডার দিন হিসেবে উদযাপিত হয়।
শীতকাল তাপমাত্রা, স্থান, সামুদ্রিক বাতাস এবং বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভর করে বেশ পরিবর্তনশীল। উদাহরণস্বরূপ কানাডার উইনিপেগের জানুয়ারীর তাপমাত্রা −11.3°C থেকে −21.4°C এর মধ্যে থাকে, কিন্তু ভ্যাঙ্কুভারের তাপমাত্রা 1.4°C থেকে 6.9°C থাকে। আবহাওয়াবিদরা প্রায়ই শীতকালকে সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা সহ তিন মাস (ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি উত্তর গোলার্ধে) হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেন।
শীতের আগমনী বার্তা বহন করে নানা ধরনের উৎসব, অনুষ্ঠান, এবং সামাজিক কার্যক্রমের সুযোগ। এটি বছরের একটি মনোরম এবং উপভোগ্য ঋতু যা প্রকৃতির সৌন্দর্য ও মানুষের জীবনে উৎসবের সুযোগ বয়ে আনে।