শাকিব খান: বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের ‘কিং খান’
শাকিব খান (জন্ম: ২৮ মার্চ, ১৯৭৯) বাংলাদেশের একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সফল চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, গায়ক, ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। ‘অনন্ত ভালবাসা’ (১৯৯৯) ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেকের পর থেকে তিনি একের পর এক সফল চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। তার অভিনীত ২৪৩ টিরও বেশি চলচ্চিত্র বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে একটি বিরাট অর্জন। তিনি ‘কিং খান’, ‘ঢালিউড কিং’, ‘নাম্বার ওয়ান শাকিব খান’ নামেও পরিচিত।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদীতে মাসুদ রানা নামে জন্মগ্রহণকারী শাকিব খানের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে নারায়ণগঞ্জে। তার ইচ্ছা ছিল ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়া। কিন্তু নৃত্য পরিচালক আজিজ রেজার মাধ্যমে চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত হন এবং সোহানুর রহমান সোহানের ‘অনন্ত ভালবাসা’ ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে শুরু হয় তার চলচ্চিত্র জীবন।
শাকিব খানের কর্মজীবনে রয়েছে অসংখ্য পুরষ্কার। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল চারটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আটটি মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, তিনটি বাচসাস পুরস্কার, এবং চারটি সিজেএফবি পারফরম্যান্স পুরস্কার। তার অভিনীত ‘ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না’, ‘খোদার পরে মা’, ‘আরো ভালোবাসবো তোমায়’, ও ‘সত্তা’ ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার লাভ করেন।
তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে ‘সুভা’, ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’, ‘বলবো কথা বাসর ঘরে’, ‘আদরের জামাই’, ‘ডন নাম্বার ওয়ান’, ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী’, ‘শিকারী’, ‘নবাব’, ‘রাজনীতি’, ‘সত্তা’, ‘চালবাজ’, ‘ভাইজান এলো রে’, ‘নাকাব’ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। ২০১১ সালে ‘মনের জ্বালা’ ছবিতে তিনি প্রথমবার গানে কণ্ঠ দেন। ২০১৪ সালে ‘হিরো: দ্যা সুপারস্টার’ ছবি দিয়ে তিনি প্রযোজক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন।
শাকিব খান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতিও ছিলেন। তিনি এসকে ফিল্মস নামের একটি প্রযোজন সংস্থাও পরিচালনা করেন। তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও মাঝেমধ্যে সংবাদমাধ্যমে আলোচনা হয়। তিনি অপু বিশ্বাসকে বিয়ে করেছিলেন এবং তাদের একটি ছেলে আছে। পরবর্তীতে তাদের তালাক হয়।
শাকিব খান বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব, তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।