লিউকেমিয়া বা রক্তক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ যা রক্ত ও অস্থিমজ্জার কোষে ক্যান্সারের সৃষ্টি করে। এই রোগে শরীর অস্বাভাবিক শ্বেত রক্তকণিকা তৈরি করে, যা স্বাভাবিক কাজ করতে পারে না। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়, এবং রক্তের অন্যান্য কোষের উৎপাদনেও বাধাগ্রস্ত হয়।
লিউকেমিয়ার প্রকারভেদ:
লিউকেমিয়া মূলত চার প্রকারের হয়:
- অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া (ALL): এটি শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
- অ্যাকিউট মায়েলয়েড লিউকেমিয়া (AML): এটি প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
- ক্রনিক লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া (CLL): এটি প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করে।
- ক্রনিক মায়েলয়েড লিউকেমিয়া (CML): এটিও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করে।
লিউকেমিয়ার লক্ষণ:
লিউকেমিয়ার লক্ষণগুলি রোগের ধরণ ও তীব্রতার উপর নির্ভর করে। কিছু সাধারণ লক্ষণ হল:
- অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা
- জ্বর ও সংক্রমণ
- ওজন কমে যাওয়া
- সহজেই রক্তক্ষরণ ও ঘা
- হাড়ে ব্যথা
- শ্বাসকষ্ট
- লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া
লিউকেমিয়ার কারণ:
লিউকেমিয়ার সঠিক কারণ এখনও অজানা। তবে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে, যেমন:
- ধূমপান
- তেজষ্ক্রিয়তা
- কিছু রাসায়নিক পদার্থ (যেমন বেনজিন)
- বংশগত কারণ
- ডাউন সিন্ড্রোম
লিউকেমিয়ার নির্ণয়:
রক্ত পরীক্ষা এবং অস্থিমজ্জার বায়োপসির মাধ্যমে লিউকেমিয়া নির্ণয় করা হয়।
লিউকেমিয়ার চিকিৎসা:
লিউকেমিয়ার চিকিৎসা রোগের ধরণ ও তীব্রতার উপর নির্ভর করে। সাধারণ চিকিৎসা পদ্ধতি হল:
- কেমোথেরাপি
- রেডিওথেরাপি
- অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন
- টার্গেটেড থেরাপি
লিউকেমিয়ার প্রতিরোধ:
লিউকেমিয়া সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। তবে উপরোক্ত ঝুঁকিপূর্ণ কারণগুলি এড়িয়ে চলার মাধ্যমে ঝুঁকি কমানো সম্ভব। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, সুষম খাদ্য এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা লিউকেমিয়া প্রতিরোধে সহায়ক।
লিউকেমিয়া একটি জটিল রোগ এবং এর চিকিৎসা ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হতে পারে। প্রাথমিক নির্ণয় ও চিকিৎসা গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।