ললিতা: এক অসাধারণ উপন্যাসের বিতর্কিত কাহিনী
ভ্লাদিমির নাবোকভের লেখা ললিতা উপন্যাসটি বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বিতর্কিত ও আলোচিত সাহিত্যকর্মগুলির মধ্যে অন্যতম। ১৯৫৫ সালে প্যারিসে প্রথম প্রকাশিত হলেও, এর বিতর্কিত বিষয়বস্তুর জন্য ব্যাপক সমালোচনা এবং আলোচনার সম্মুখীন হয়। এই উপন্যাসে একজন মধ্যবয়স্ক, বিবাহিত পুরুষ হাম্বার্ট হাম্বার্টের এক ১২ বছর বয়সী কিশোরী ডলোরিস হেজ (যাকে হাম্বার্ট ললিতা ডাকেন) প্রতি যৌন আকর্ষণ এবং তার জনিত ঘটনাপ্রবাহ কেন্দ্রীয় থিম।
কাহিনীর পটভূমি:
৪০ বছর বয়সী হাম্বার্ট হাম্বার্ট তার শৈশবের প্রেমিকা আন্নাবেলের স্মৃতি নিয়ে নিয়মিতভাবে মানসিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন। তার কাছে আন্নাবেলের মতোই মনে হয় ললিতা। নতুন বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় হাম্বার্ট ডলোরিসের বিধবা মায়ের সাথে পরিচিত হন। ডলোরিসের প্রতি আকর্ষণের কারণে তিনি শার্লট হেজকে বিয়ে করেন এবং ললিতার সৎ বাবা হন। পরে শার্লট তার গোপন ডায়েরী পড়ে হাম্বার্টের ললিতার প্রতি আসক্তির কথা জানতে পারে এবং অন্য জায়গায় চলে যাবার চেষ্টা করে দুর্ঘটনায় মারা যান। মায়ের মৃত্যু পর, হাম্বার্ট ললিতাকে নিয়ে দেশান্তরী ভ্রমণ শুরু করেন এবং একটি হৃদয়বিদারক ঘটনার পর ললিতা হারিয়ে যান। ছয় বছর পরে ললিতাকে গর্ভবতী অবস্থায় ফোনে খুঁজে পান হাম্বার্ট। টাকার জন্য ললিতা তার সাহায্য চায়। ললিতা এসময় এক প্রকৌশলীকে বিয়ে করেছে। হাম্বার্ট ললিতাকে টাকা দেন এবং তার অপহরণকারীর সন্ধান পান। শেষ পর্যন্ত তিনি অপহরণকারীকে হত্যা করেন এবং পরে জেলে মারা যান। ললিতা শেষ পর্যন্ত প্রসবকালে মারা যায়।
উপন্যাসের থিম:
ললিতা উপন্যাস শুধুমাত্র যৌন আকর্ষণের কাহিনী নয়; এটি মানব মনস্তত্বের গভীরে সুন্দর ভাবে প্রবেশ করেন এবং মানসিক সমস্যা, সামাজিক নিয়ন্ত্রণ, এবং ভালোবাসার জটিলতা এবং প্রেম ও কামনার সীমানার প্রতিফলন করে। এটি একই সাথে এক ভয়ানক ট্রাজেডিও। উপন্যাসটি ব্যাপকভাবে বিতর্কিত কারণ এটি শিশুদের যৌন নির্যাতনের বিষয় উত্থাপন করে।
চলচ্চিত্রায়ন:
১৯৬২ সালে স্ট্যানলি কুবরিক পরিচালিত এবং ১৯৯৭ সালে অ্যাড্রিয়ান লাইন পরিচালিত দুটি চলচ্চিত্রে ললিতা উপন্যাস রূপান্তরিত হয়।
উপসংহার:
ললিতা বিতর্ক সত্ত্বেও একটি ক্লাসিক কাজ। এটি পঠন-শিল্পের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং সাহিত্যের ইতিহাসে এর গুরুত্ব অপরিসীম।