রেমাক্রি: বান্দরবানের অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমারোহ
বান্দরবানের থানচি উপজেলায় অবস্থিত রেমাক্রি, প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে অতুলনীয় সৌন্দর্যের এক আধার। এই নামটি সাধারণত দুটি প্রাকৃতিক আকর্ষণের সাথে যুক্ত: রেমাক্রি জলপ্রপাত এবং রেমাক্রি খাল। এই দুটি স্থানই পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণীয়।
রেমাক্রি জলপ্রপাত: উচ্চতায় খুব বেশি না হলেও, রেমাক্রি জলপ্রপাতের প্রস্থ বেশ বিস্তৃত। এর চারপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ, সবুজ পাহাড় ও স্বচ্ছ নদীর সমন্বয়ে এক অপূর্ব দৃশ্য সৃষ্টি করেছে। বর্ষাকালে পানির প্রবাহ বেশি থাকে, আর শীতকালে কমে যায়, তবে একেবারেই শুকিয়ে যায় না। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস পর্যটন উপযুক্ত সময় হিসেবে বিবেচিত হয়। ভারী বর্ষায় সাঙ্গু নদীর পানির উচ্চতা বিপদসীমার কাছাকাছি থাকায় অনেক সময় প্রশাসন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
রেমাক্রি খাল: রুমার অন্তর্গত সুনসংপাড়ার তুবং ঝরনা থেকে রেমাক্রি খালের উৎপত্তি। এটি সাঙ্গু নদীর একটি ছোট উপনদী, যা রুমা থেকে থানচি পর্যন্ত দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে রেমাক্রি বাজারের কাছে সাঙ্গু নদীতে মিশেছে। খালটি অগভীর, খরস্রোতা এবং পাথরে ভরা। বর্ষায় পানির তীব্র স্রোত দেখা যায়। এই খালের পাশ দিয়ে হেঁটেই পর্যটকরা নাফাখুম জলপ্রপাতে যান।
নাফাখুম জলপ্রপাত: রেমাক্রি অঞ্চল থেকে প্রায় তিন ঘন্টা হাটলে নাফাখুম জলপ্রপাত দেখা যায়। এটি বাংলাদেশের বৃহৎ জলপ্রপাতগুলির একটি। রেমাক্রি খালের পানি নাফাখুমে এসে প্রায় ২৫-৩০ ফুট নিচে নেমে প্রকৃতির এই অপূর্ব জলপ্রপাতের সৃষ্টি করেছে। এখানে সবুজ পাহাড়, বনানী, পাথুরে ভূমি ও ঝর্ণার এক অসাধারণ মেলবন্ধন দেখা যায়।
যোগাযোগ: ঢাকা থেকে বান্দরবান, এবং বান্দরবান থেকে থানচি যাওয়ার জন্য বাস ও জীপের ব্যবস্থা আছে। থানচি থেকে রেমাক্রি যাওয়ার জন্য নৌকা ভাড়া করতে হয়। প্রশাসনের কাছ থেকে ভ্রমণের অনুমতি নেওয়া এবং একজন গাইড নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
থাকার ব্যবস্থা: রেমাক্রি বাজারে ছোট ছোট কটেজ ও আদিবাসীদের বাসায় থাকার ব্যবস্থা আছে।
অন্যান্য তথ্য: রেমাক্রি ও তার আশপাশের অঞ্চলে বিভিন্ন পর্যটন স্থল রয়েছে যেমন, তিন্দু, রাজাপাথর, বড়পাথর, পদ্মমুখ ঝিরি, মিলনছড়ি, চিম্বুক এবং নীলগিরি। সারা বছরই পর্যটকদের আনাগোনা থাকে, তবে ভারী বর্ষায় পানিবৃদ্ধির কারণে ভ্রমণে ঝুঁকি থাকতে পারে।
রেমাক্রি ভ্রমণ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য পেতে, আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।