দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্র জগতের একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং সফল অভিনেতা হলেন রাম চরণ। তেলুগু চলচ্চিত্রে তাঁর অবদান অসামান্য। ২৭শে মার্চ ১৯৮৫ সালে চেন্নাইয়ে জন্মগ্রহণকারী রাম চরণ, তেলুগু চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী চিরঞ্জীবি এবং সুরেখার পুত্র। তাঁর দুই বোন রয়েছে। তিনি তাঁর অভিনয়ের পাশাপাশি একজন সফল প্রযোজক ও উদ্যোক্তা হিসেবেও পরিচিত।
২০০৭ সালে ‘চিরুথা’ ছবি দিয়ে অভিনয় জীবনে পা রাখেন রাম চরণ। এই ছবিটি বক্স অফিসে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে এবং তিনি শ্রেষ্ঠ নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরষ্কার লাভ করেন। এরপর ‘মগধীর’ (২০০৯) ছবির মাধ্যমে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এই ছবিটি মুক্তির সময় তেলুগু চলচ্চিত্রের সর্বকালের সর্বোচ্চ আয়কারী ছিল। ‘মগধীর’-এর জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরষ্কারও জিতেছিলেন।
এর পরে রাম চরণ আরও বেশ কিছু সফল ছবিতে অভিনয় করেন, যেমন ‘রাচা’ (২০১২), ‘নায়ক’ (২০১৩), ‘ইয়েভাডু’ (২০১৪), ‘গোবিন্দুদু আন্দারিভেদেলে’ (২০১৪), ‘ধ্রুব’ (২০১৬), ‘রঙ্গস্থলম’ (২০১৮)। রঙ্গস্থলম ছবিতে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য তিনি দ্বিতীয়বারের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরষ্কার অর্জন করেন।
তবে তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য এসেছে ‘আরআরআর’ (২০২২) ছবির মাধ্যমে। এটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে এবং রাম চরণকে প্যান-ইন্ডিয়ান তারকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। ‘আরআরআর’-এর জন্য তিনি ক্রিটিকস চয়েস সুপার অ্যাওয়ার্ডে মনোনয়ন পান এবং তৃতীয়বারের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরষ্কার জিতে নেন।
চলচ্চিত্রের বাইরেও রাম চরণের অনেক সাফল্য রয়েছে। তিনি ২০০৯ সাল থেকে ফোর্বস ইন্ডিয়ার সেলিব্রিটি ১০০ তালিকায় স্থান পেয়ে আসছেন। ২০১৬ সালে তিনি নিজের প্রোডাকশন হাউস ‘কোনিডেলা প্রোডাকশন কোম্পানি’ চালু করেন। তিনি হায়দ্রাবাদ পোলো এবং রাইডিং ক্লাবের মালিক এবং আঞ্চলিক বিমান পরিষেবা ‘ট্রুজেট’-এর সহ-মালিক ছিলেন। তিনি প্রায়ই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন এবং কোভিড-১৯ মহামারীর সময় অক্সিজেন ব্যাংক চালু করার কাজে অংশ নিয়েছিলেন।
২০১১ সালে রাম চরণ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন উপাসনা কামিনেনির সাথে। উপাসনা অ্যাপোলো চ্যারিটির ভাইস-চেয়ারম্যান এবং বি পজিটিভ ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক। ২০২৩ সালে তাদের কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।
সারমর্মে, রাম চরণ তেলুগু চলচ্চিত্রের একজন সফল এবং প্রভাবশালী অভিনেতা, প্রযোজক এবং উদ্যোক্তা। তাঁর অভিনয় কौশল, ব্যবসায়িক দক্ষতা এবং মানবিক কাজ তাঁকে দক্ষিণ ভারতের একজন অন্যতম আইকন করে তুলেছে।