রশিদ আহমদ: একাধিক ব্যক্তিত্বের বর্ণনা
উল্লেখ্য, "রশিদ আহমদ" নামটি একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কিত। এই লেখায় আমরা দুইজন বিখ্যাত রশিদ আহমদের জীবনী সংক্ষেপে তুলে ধরবো, তাদের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করার চেষ্টা করবো এবং যথাসম্ভব তথ্য সরবরাহ করবো।
১. রশিদ আহমদ লুধিয়ানভি (১৯২২-২০০২):
এই রশিদ আহমদ ছিলেন একজন প্রখ্যাত দেওবন্দি পাকিস্তানি ইসলামি পণ্ডিত ও ফকিহ। ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯২২ সালে জন্মগ্রহণকারী লুধিয়ানভি ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০২ সালে ইন্তেকাল করেন। তিনি করাচিতে জামিয়াতুর রশিদ ও আল রশিদ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং "আহসানুল ফতওয়া" গ্রন্থের রচয়িতা ছিলেন। তিনি জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের (ফ) পাঞ্জাব প্রদেশের সভাপতি এবং দারুল উলুম করাচীর দারুল ইফতা ওয়াল ইরশাদের প্রধান ছিলেন। তিনি দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন এবং হুসাইন আহমদ মাদানির মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করেন। মদিনাতুল উলুম, হায়দরাবাদ, জামিয়া দারুল হুদা থেরি, দারুল উলুম করাচি এবং দারুল ইফতা ওয়াল ইরশাদ সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় চল্লিশ বছর অধ্যাপনা করেছেন এবং এইড অর্গানাইজেশন অব দ্য ওলামা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
২. রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী (১৮২৯-১৯০৫):
এই রশিদ আহমদ ছিলেন একজন ভারতীয় ইসলামি পণ্ডিত এবং সুফি। তিনি ১০ মে ১৮২৯ সালে ব্রিটিশ ভারতের সাহারানপুর জেলার গাঙ্গোহে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১১ আগস্ট ১৯০৫ সালে ইন্তেকাল করেন। তিনি দেওবন্দ মাদ্রাসা কেন্দ্রিক দেওবন্দি ভাবধারার ইসলামি আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবির মৃত্যুর পর দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রধান নিযুক্ত হন। ফিকহ ও সুফিবাদের উপর প্রায় ১৪টি বই রচনা করেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল "ফতোয়া রশিদিয়া" ও "হিদায়াতুশ শিয়া"। তার জন্মস্থান ছিল আবদুল কুদ্দুস গাঙ্গোহীর সমাধির নিকটে। তিনি মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবির সাথে দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা হাজি ইমদাদউল্লাহ মুহাজির মাক্কির কাছে সুফিবাদ শিক্ষালাভ করেন এবং ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার শিক্ষা ও আধ্যাত্মিক জীবনের বিস্তারিত বিবরণ উপরোক্ত লেখায় উল্লেখিত আছে।
উভয় রশিদ আহমদই দেওবন্দি আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন, কিন্তু তাদের জন্ম, কাজ এবং কালক্রমের মধ্যে বিরাট পার্থক্য বিদ্যমান। আশা করি উপরোক্ত তথ্য দুজন রশিদ আহমদের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে সহায়তা করবে।