যোধপুর: রাজস্থানের নীল শহরের গৌরব
ভারতের রাজস্থান রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর যোধপুর, এর ঐতিহাসিক গৌরব, স্থাপত্যের সৌন্দর্য এবং মনোমুগ্ধকর মরুভূমি পরিবেশের জন্য বিখ্যাত। ১৫ লক্ষেরও বেশি জনসংখ্যার সাথে, এটি রাজস্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ মহানগরী। একসময় যোধপুর রাজ্যের রাজধানী, এটি ঐতিহাসিকভাবে মারোয়ার অঞ্চলের শাসনকেন্দ্র ছিল। থর মরুভূমির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে অসংখ্য প্রাসাদ, দুর্গ ও মন্দিরের সমাহার যোধপুরকে পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
- *মেহরানগড় দুর্গ:** যোধপুরের প্রাণকেন্দ্র মেহরানগড় দুর্গ। এই দুর্গের চারপাশে বৃত্তাকারে গড়ে উঠেছে পুরনো শহর, যা প্রাচীর ও বেশ কিছু দরজা দিয়ে বেষ্টিত। বিগত কয়েক দশক ধরে শহরটি প্রাচীরের বাইরেও ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়েছে। যোধপুর রাজস্থানের ভৌগোলিক কেন্দ্রের কাছাকাছি অবস্থিত, যা পর্যটকদের জন্য সুবিধাজনক একটি ঘাঁটি হিসেবে কাজ করে।
- *রাও যোধা ও শহরের প্রতিষ্ঠা:** ১৪৫৯ সালে রাঠোর বংশের রাজপুত প্রধান রাও যোধা যোধপুর শহর প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি আশেপাশের অঞ্চল জয় করে মারোয়ার রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। প্রাথমিকভাবে মান্ডোর ছিল রাজ্যের রাজধানী, কিন্তু রাও যোধার আমলে যোধপুর রাজধানীতে পরিণত হয়। দিল্লি ও গুজরাটের মধ্যবর্তী কৌশলগত স্থানে অবস্থিত হওয়ায় আফিম, তামা, রেশম, চন্দন, খেজুর ইত্যাদি পণ্যের সমৃদ্ধ বাণিজ্যে যোধপুর সমৃদ্ধি লাভ করে।
- *জনসংখ্যা ও জলবায়ু:** ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, যোধপুরের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১০ লক্ষ। শহরটির জলবায়ু বেশিরভাগ সময় উষ্ণ ও আধা-শুষ্ক। বছরের বেশিরভাগ সময় শুষ্ক থাকে, জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সামান্য বৃষ্টিপাত হয়।
- *অর্থনীতি ও শিক্ষা:** বিভিন্ন শিল্পের মাধ্যমে রাজস্থানের অর্থনীতিতে যোধপুরের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। এটি হস্তশিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। আইআইটি যোধপুর, এআইআইএমএস যোধপুর, সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শহরটিকে শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে স্থাপন করেছে। হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের একটি তেল শোধনাগারও যোধপুরের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
- *পর্যটন:** “ব্লু সিটি” নামে পরিচিত যোধপুর ভারতের একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। মেহরানগড় দুর্গ, উমেদ ভবন প্রাসাদ, জসমন্দ লেক, সহ অনেক আকর্ষণীয় স্থান পর্যটকদের কাছে আকর্ষণ করে।