মোহালি: পাঞ্জাবের একটি উন্নয়নশীল নগর
মোহালি, যার আনুষ্ঠানিক নাম সাহেবজাদা অজিত সিং নগর, ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের রূপনগর জেলার একটি পরিকল্পিত শহর। চণ্ডীগড়ের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এটি একটি প্রশাসনিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র। ২০০৬ সালে রূপনগর জেলার অংশ থেকে পৃথক হয়ে মোহালি একটি স্বাধীন জেলায় পরিণত হয়।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
মোহালির ইতিহাস প্রাচীনকালে বিস্তৃত। হরপ্পা সভ্যতার অস্তিত্বের প্রমাণ এখানে পাওয়া গেছে। শিখ সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবে গুরু হর রাইয়ের মতো গুরুজনের স্মৃতি এখানে জড়িত। ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের পর চণ্ডীগড়কে নতুন রাজধানী হিসেবে নির্বাচনের সাথে মোহালির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১ নভেম্বর পাঞ্জাবের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী গিয়ানি জৈল সিং মোহালি শহরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং এর নামকরণ করেন সাহেবজাদা অজিত সিং নগর।
জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক অবস্থান:
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মোহালির জনসংখ্যা প্রায় ১৭৬,১৫২। শহরটির অবস্থান চণ্ডীগড়ের নিকটে, এবং এ তিন শহর মিলে ত্রিশহর (ট্রাইসিটি) নামে পরিচিত। মোহালির জলবায়ু উপ-উষ্ণমন্ডলীয় মৌসুমি, গ্রীষ্মকাল গরম এবং শীতকাল কিছুটা ঠান্ডা।
অর্থনীতি ও উন্নয়ন:
মোহালি একটি বৃহৎ আইটি হাব হিসেবে দ্রুত উন্নয়নশীল। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে আইটি কোম্পানি, এখানে কার্যক্রম পরিচালনা করে। ট্র্যাক্টর উৎপাদনকারী পাঞ্জাব ট্র্যাক্টর লিমিটেড (PTL), আইসিআই পেইন্টস, পাঞ্জাব কমিউনিকেশন্স লিমিটেডসহ অনেক ছোট ও মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠান এখানে অবস্থিত। কোয়ার্ক সিটির মতো বৃহৎ প্রকল্প এখানে অবস্থিত যা বহুসংখ্যক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।
ক্রীড়া ও পর্যটন:
মোহালি ক্রীড়ার জন্যও বিখ্যাত। এখানে আইএস বিন্দ্রা স্টেডিয়াম, মুলানপুর ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম এবং মোহালি ইন্টারন্যাশনাল হকি স্টেডিয়াম জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। শ্রী শিব মন্দির, জঠেদার বাবা হনুমান সিং মন্দির এবং কিছু দরগাহ মোহালির পর্যটন আকর্ষণ।
পরিবহন:
মোহালিতে চণ্ডীগড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মোহালি রেলওয়ে স্টেশন, এবং বাস ও অটোরিক্সা পরিবহন ব্যবস্থা উপলব্ধ। চণ্ডীগড় মেট্রো প্রকল্প মোহালিকে চণ্ডীগড়ের সাথে আরও সুসংযুক্ত করবে।